Page Nav

HIDE

Classic Header

{fbt_classic_header}

NEW :

latest

প্রাচীন ও মধ্যযুগ থেকে নির্বাচিত 20টি 2 নম্বর মানের প্রশ্নোত্তর (set - 03) :

           : প্রাচীন ও মধ্যযুগ থেকে নির্বাচিত 20টি 2 নম্বর মানের প্রশ্নোত্তর :          : প্রশ্নের বিষয় :  চর্যাপদ,  শ্রীকৃষ্ণকীর্তন,  চন্ডি...

 

        : প্রাচীন ও মধ্যযুগ থেকে নির্বাচিত 20টি 2 নম্বর মানের প্রশ্নোত্তর :        
: প্রশ্নের বিষয় : 
চর্যাপদ,  শ্রীকৃষ্ণকীর্তন,  চন্ডিদাস,  বিদ্যাপতি,  জ্ঞানদাস,  গোবিন্দদাস,  মুকুন্দ চক্রবর্তী,  ভারতচন্দ্র রায়,  বিজয় গুপ্ত, কেতকাদাস ক্ষেমানন্দ, ঘনরাম চক্রবর্তী,  কৃত্তিবাস ওঝা,  মালাধর বসু,  কাশীরাম দাস, বৃন্দবন দাস,  কৃষ্ণদাস কবিরাজ, সৈয়দ আলাওল,  দৈৗলত কাজি,  রামপ্রসাদ সেন ও কমলাকান্ত ভট্টাচার্য ।
                                                                                                                                                                                               

১) চর্যাপদ কবে রচিত হয় ? এটি কোন ছন্দে রচিত ?  হরপ্রসাদ শাস্ত্রী যে চর্যাপদ প্রকাশ করেছিলেন, তাতে আর কি কি গ্রন্থ ছিল ?
⬐ চর্যাপদ আনুমানিক দশম থেকে দ্বাদশ শতাব্দীর মধ্যে রচিত হয় । 
⬐ চর্যাপদ পাদাকুলক ছন্দে রচিত ।
⬐ ‘হাজার বছরের পুরাণ বাঙ্গালা ভাষায় বৌদ্ধ গান ও দোঁহা’ নামে গ্রন্থটি প্রকাশিত গ্রন্থে ছিল চাঁরটি পুঁথি । এই পুঁথিগুলি হল :     (i) ‘চর্যাগীতিকোষ’, 
            (ii) ‘কৃষ্ণাচার্যের দোহাকোষ’, 
            (iii) ‘সরহবজ্রের দোহাকোষ’ ও 
            (iv) ‘ডাকার্নব’ । 

২) ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ কাব্যের প্রকৃত নাম কি ? এটি কি জাতীয় কাব্য ? কাব্যটি কবে কার সম্পাদনায় কোথা থেকে প্রকাশিত হয় ?
⬐ ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ কাব্যের প্রকৃত নাম - ‘শ্রীকৃষ্ণসন্দর্ভ’ ।
⬐ এটি রাধাকৃষ্ণ লীলা বিষায়ক নাট্যগীতি কাব্য ।
⬐ ১৯১৬ খ্রিষ্টাব্দে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ থেকে বসন্তরঞ্জন রায় বিদ্বদ্বল্লভের সম্পাদনায় ‘‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ কাব্য প্রকাশিত হয় ।

৩) বাংলা ভাষায় কে প্রথম বৈষ্ণব পদ রচনা করেন ? তাঁর জন্মস্থান কোথায় ? কোন সময়ে তাঁর জন্ম ?
⬐ বাংলা ভাষায় কে প্রথম বৈষ্ণব পদ রচনা চন্ডিদাস ।
⬐ চন্ডিদাস বীরভূম জেলার নানুর গ্রামে ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহন করেন ।
⬐ চন্ডিদাসের জন্মসাল সঠিক ভাবে বলা যায় না । তবে অনুমান করা হয় ১৪১৭ খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহন করেন । সেই হিসাবে তিনি পঞ্চদশ শতাব্দীর কবি ।

৪) কোন বৈষ্ণব কবিকে ‘অভিনব জয়দেব’ বলা হয় ? তাঁকে ওই নামে অভিহিত করার কারণ কি ? এই নাম কে দিয়েছিলেন ?
⬐ বিদ্যাপতিকে ‘অভিনব জয়দেব’ বলা হয় ।
⬐ জয়দেবের রাধার আঙ্গিকে বিদ্যাপতির রাধা চিত্রিত হয়েছে । তাছাড়া বিদ্যাপতি জয়দেবকে অনসরণ করে তাঁর রাধা - কৃষ্ণ বিষায়ক পদ রচনা করেছেন । তাই বিদ্যাপতিকে ‘অভিনব জয়দেব’ বলা হয় ।
⬐ এই নাম দেন শিবসিংহ ।

৫) জ্ঞানদাসের পদের বৈশিষ্ট্য লিখুন ।
পদের বৈশিষ্ট্য :
ক) জ্ঞানদাসের পদ অতি মাত্রায় রোমাণ্টিক।
খ) জ্ঞানদাসের পদে রয়েছে রূপ ও অরূপের সমন্বয়।
গ) তিনি বাংলা ও ব্রজবুলি ভাষায় পদ রচনা করেছেন ।
ঘ) জ্ঞানদাসের পদ স্নিগ্ধ মাধুর্যের অবিরল উৎসরনে বিশেষভাবে বিশিষ্টতা লাভ করেছে ।

৬) অভিসার পর্যায়ের শ্রেষ্ঠ পদকর্তা কে? তাঁর উপাধি কী? তিনি কি চৈতন্য পূর্ববর্তী পদকার? তাঁর একটি বিখ্যাত পদের দুটি পংক্তি লিখুন। 
⬐ অভিসার পর্যায়ের শ্রেষ্ঠ্য পদকর্তা হলেন—গোবিন্দদাস ৷
⬐ পদকর্তার উপাধি হল—‘কবিরাজ’ ।
⬐ গোবিন্দ দাস হলেন— চৈতন্য পরবর্তী যুগের কবি।
⬐ তাঁর অভিসার পর্যায়ের একটি পদ হল—
‘মন্দির বাহির কঠিন কপাট।
চলইতে শঙ্কিল পঙ্কিল বাট।”

৭) ভারতচন্দ্র রায়গুণাকরকে ‘যুগসন্ধির কবি’ কেন বলা হয় ?
যুগসন্ধির কবি বলার কারণ :
             ভারতচন্দ্রের কাব্যগুণ মধ্যযুগীয় মঙ্গলকাব্যের রীতিতে লেখা হয় । যুগ রুচির কারণে তিনি দেবতার মাহাত্ম কাব্যে তুলে ধরেছেন । কিন্তু এগুলি শুধু নামমাত্র । কবি তাঁর কাব্যে নতুনত্বের উদ্বোধন ঘটিয়েছেন । তাঁর কাব্যে পুরাততন যুগের শেষ, নতুন যুগের শুরু । তাই তাকে ‘যুগসন্ধির কবি’ বলা হয় ।

৮) ‘এ যুগে জন্মগ্রহণ করিলে তিনি যে কবি না হইয়া একজন ঔপন্যাসিক হইতেন, তাহাতে সন্দেহ নাই'—মুকুন্দরাম সম্পর্কে একথা বলার কারণ কী ?
একথা বলার কারণ :
        সামাজিক মানুষের সংঘাত বিক্ষুব্ধ জীবনের বাস্তব কাহিনি রূপায়ণে মুকুন্দরাম যে ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যমণ্ডিত চরিত্রগুলি তুলে ধরেছেন তাতেই তাঁর কবিপ্রতিভা ঔপন্যাসিকের সমধর্মী হয়ে আধুনিক চেতনার স্বগোত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে। মুকুন্দরাম কেবল সময়ের অভাব অতিক্রম করতে, অতীত প্রথার সঙ্গে নিজেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করতে, অলৌকিকতার হাত থেকে সম্পূর্ণ মুক্তিলাভ করতে পারেননি বলেই একজন খাঁটি ঔপন্যাসিক হতে পারেননি। দক্ষ ঔপন্যাসিকের অধিকাংশ গুণই তাঁর মধ্যে বর্তমান ছিল।

৯) মনসামঙ্গলের আদি কবি কে ? তাঁর কাব্যের নাম কি ? অন্য কোন মনসামঙ্গলের কবি তাকে শ্রদ্ধা রেখে কাব্য শুরু করেন ? ওই কবির কাব্যের নাম কি ?
⬐ মনসা মঙ্গল কাব্যের আদি কবি কানা হরি দত্ত।
⬐ তাঁর গ্রন্থের নাম ‘পদ্মের সর্পসজ্জা’।
⬐ কবি বিজয়গুপ্ত তাঁকে শ্রদ্ধা রেখে মনসামঙ্গল কাব্য রচনা করেন।
⬐ বিজয় গুপ্তের কাব্যের নাম—পদ্মপুরাণ।

১০) কার লেখা মনসামঙ্গল কাব্য সর্বপ্রথম প্রকাশিত হয়? এটি কবে, কোথা থেকে প্রকাশ পায়? কবির আবির্ভাব হয় কোন সময়ে ?
⬐ তাঁর কাব্য 1896 সালে বরিশাল থেকে প্রকাশিত হয়।
⬐ রাঢ় বাংলার কবি কেতকাদাস ক্ষেমানন্দের মনসামঙ্গল কাব্য সর্বপ্রথম প্রকাশিত হয়।
⬐ 1844 খ্রিষ্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাঁর কাব্য প্রথম প্রকাশিত হয়। 
⬐ তাঁর কাব্য আনুমানিক—1640 খ্রিষ্টাব্দে রচিত। তাই বলা যায় তিনি সপ্তদেশ শতাব্দীর কবি।

১১) ‘ধর্মমঙ্গল’ কাব্যের আদি কবি কে ? তার কাব্যের নাম কি ? ধর্মমঙ্গল কাব্যের কটি কাহিনী ও কিকি ?
⬐ ‘ধর্মমঙ্গল’ কাব্যের আদি কবি হলেন ময়ূরভট্ট।
⬐ তাঁর কাব্যের নাম ‘হাকন্দপুরাণ’।
⬐ ধর্মমঙ্গল কাব্যের দুটি কাহিনি :
(a) রাজা হরিশচন্দ্রের কাহিনি ও
(b) লাউসেনের কাহিনি।

১২) কৃত্তিবাসের রামায়নের নাম কি ? এরূপ নামকরনের কারণ কি ?
⬐ কৃত্তিবাসী রামায়ণের নাম—“শ্রীরাম পাঁচালি।”
⬐ নামকরণের কারণ :
     তৎকালে কাব্য পাট করা হত না, গাওয়া হত। একদল গায়ক আসরে সুর করে গাইতেন-এর সাধারণ নাম ছিল ‘পাচালি’। কবি এর বশবর্তী হয়ে তার রচিত শ্রীরাম কথাকে এমন নামকরণ করেন।

১৩) মালাধর বসু ভাগবতের কোন কোন খণ্ডের অনুবাদ করেন? তাঁর অনুবাদিত খণ্ডগুলির নাম কী?
⬐ মালাধর বসু ভাগবতের দশম ও একাদশ খণ্ডের অনুবাদ করেন।
⬐ দশম খণ্ডের অনুবাদের নাম—“শ্রীকৃষ্ণবিজয়”। 
⬐ একাদশ খণ্ডের অনুবাদের নাম - ‘শ্ৰীকৃষ্মমঙ্গল’ ।

১৪) কাশীরাম দাসের বংশগত পদবী কী? তিনি কেন—‘দাস’ পদবি ব্যবহার করতেন? তাঁর গুরু নাম কী? তাঁর পেশা কী ছিল?
⬐ কাশীরাম দাসের বংশগত পদবী—‘দেব।
⬐ তৎকালে বঙ্গদেশে বৈষ্ণব ধর্মের ব্যাপক প্রচলন ছিল। আর কবি ছিলেন বৈষ্ণব ভাবাপন্ন। তাই মনে হয় তিনি বৈঘ্নব চিত্ত বিনয়ে ‘দেব’ না লিখে 'দাস' লিখতেন।
⬐ কাশীরাম দাসের গুরু—অভিরাম মুখটি।
⬐ মেদিনীপুরের আওসগড়ের ‘জমিদারি দেখাশোনাই তাঁর কাজ ছিল।

১৫) ‘চৈতন্যভাগবত’ কার লেখা? কাব্যটির প্রথম নামকরণ কি ছিল? পরে নাম পরিবর্তন করা হয় কেন ?
⬐ চৈতন্যভাগবত গ্রন্থটি বৃন্দাবনদাসের লেখা।
⬐ কাব্যটির প্রথম নাম ছিল চৈতন্যমঙ্গল ।
⬐ নাম পরিবর্তনের কারণ :
        কাব্যটির নাম পরিবর্তনের কারণ হিসাবে বলা হয়—লোচন দাসের কাব্যের নামের সঙ্গে মিলে যাওয়ায় মায়ের নির্দেশ নাম পরিবর্তিত হয় ; কারও মতে বৃন্দাবনের গোস্বামীরা উক্ত নাম করন করেন। আবার কারও মতে বৃন্দাবন দাসকে ব্যাসদেবের অবতার বলা হয়, ব্যাসদেব ভাগবত রচনা করেছেন, অতএব, বৃন্দাবন দাসের কাব্যের নাম চৈতন্য ভাগবত হওয়াই যুক্তি সংগত।

১৬) । চৈতন্য জীবনী কাব্যের উৎকৃষ্ট রচয়িতা কে? গ্রন্থটির নাম কী? গ্রন্থটি চৈতন্য জীবনী হিসাবে শ্রেষ্ঠ কেন?
⬐ চৈতন্য জীবনী কাব্যের উৎকৃষ্ট রচয়িতা কৃষ্ণদাস কবিরাজ।
⬐ তাঁর রচিত গ্রন্থের নাম শ্রীচৈতন্য চরিতামৃত।
⬐ কৃষ্ণদাস কবিরাজই সর্বপ্রথম চৈতন্য দর্শনের বিজ্ঞানসম্মত আলোচনা করেছেন। তাঁর পূর্বে কোনো চৈতন্য জীবনী গ্রন্থে চৈতন্যতত্ত্ব সম্পর্কে বিশেষ আলোচনা ছিল না। গ্রন্থটি মহা প্রভুর অন্তঃজীবনের প্রামাণ্য দলিল। কাব্যটিতে কৃষ্ণপ্রেমের স্বরূপ খুব সহজ ভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে এবং ইতিহাস রসতত্ত্ব, দর্শন এক সূত্রে গ্রথিত হয়েছে।

১৭) ‘লোরচন্দ্রানী' কার লেখা? অনুমানিক কত সালের মধ্যে কাব্য লেখা? এর অপর নাম কী? এর দুটি চরিত্রের নাম লিখুন।
⬐ 'লোরচন্দ্রাণী' গ্রন্থটির লেখক–দৌলত কাজি ও সৈয়দ আলাতল। 
দৌলত কাজি আনুমানিক 1622 খ্রিঃ থেকে 1638 খ্রিষ্টাব্দদের মধ্যে কাব্যটির 2/3 অংশ লিখে মারা যায়। অবশিষ্ট অংশ 1559 খ্রিষ্টাব্দে সৈয়দ আলাওল লেখেন। 
⬐ গ্রন্থটির অপর নাম—“সতীময়না”। 
⬐ এই গ্রন্থের দুটি চরিত্র হল রত্নসেন, লোরক।

১৮) । আলাওল কোন অঞ্চলের কবি ? তাঁর প্রসিদ্ধ কাব্যটির নাম কী ? সেটি কোন শ্রেণীর কাব্য? কাব্যটির বিষয়বস্তু দুটি বাক্যে লিখুন। 
⬐ আলাওল বার্মা প্রদেশের চট্টগ্রাম সন্নিহিত আরাকান রাজ্যের কবি। তাঁর প্রসিদ্ধ কাব্য হল—‘পদ্মাবতী’ ।
⬐ এটি ইতিহাস মিশ্রিত রোমান্টিক প্রণয়াখ্যান কাব্য।
⬐ কাব্যের বিষয়বস্তু :
         মেবারের রানি পদ্মিনীর রূপে মুগ্ধ হয়ে আলাউদ্দিন খলজি চিতোর আক্রম করে রত্নসেনকে হত্যা করে। নিজ সতীত্ব রক্ষা করার জন্য পদ্মাবতীর জ্বলন্ত অগ্নিকুণ্ডে আত্মত্যাগের কাহিনী এই গ্রন্থের মূল বিষয়।

১৯) বঙ্গদেশে বৈষ্ণব পদাবলীর তুলনায় শাক্ত পদাবলী জনপ্রিয় হওয়ার কারণ কি ?
জনপ্রিয়তার কারণ :
         বৈক্ষ্ণব পদাবলীর মূল বিষয় বাঙালির সমাজ জীবন ও গৃহজীবনকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠেনি। কিন্তু শাক্ত পদাবলীর মূল বিষয় বাঙালি সমাজ জীবন। আগমনি-বিজয়ার গান বাঙালির চিরন্তন সত্ত্বাকে বিচলিত করে। আবার বৈষ্ণব পদাবলীর ষড় গোস্বামীদের তত্ত্ব কথা বাঙালিদের প্রাণের মূলকে টান দিতে পারে নি।

২০) ‘সাধক রঞ্জন’ কার লেখা? তিনি কোন্ ধারার কবি? তিনি কোন্ অঞ্চলের কবি ? জন্মসন কত?
⬐ ‘সাধক রঞ্জন’ কমলাকান্ত ভট্টাচার্যের লেখা।
⬐ তিনি শাক্তপদাবলী ধারার অন্যতম কবি।
⬐ তিনি রাঢ় বঙ্গের কবি ।
⬐ কবির জন্ম ১৭৭২ খ্রিঃ।

No comments