দশম শ্রেণীর ‘সাহিত্য সঞ্চয়ন’ বইয়ের প্রতিটি বিষয় আমাদের ওয়েবসাইটে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে । আজকের আলোচনা ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’ । ‘‘আয় ...
দশম শ্রেণীর ‘সাহিত্য সঞ্চয়ন’ বইয়ের প্রতিটি বিষয় আমাদের ওয়েবসাইটে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে । আজকের আলোচনা ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’ ।
‘‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি”
-- শঙ্খ ঘোষ
মূল কবিতা
আমাদের ডান পাশে ধ্বস
আমাদের বাঁয়ে গিরিখাদ
আমাদের মাথায় বোমারু
পায়ে পায়ে হিমানীর বাঁধ
আমাদের পথ নেই কোনো
আমাদের ঘর গেছে উড়ে
আমাদের শিশুদের শব
ছড়ানো রয়েছে কাছে দূরে!
আমরাও তবে এইভাবে
এ-মুহূর্তে মরে যাব না কি?
আমাদের পথ নেই আর
আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি।
আমাদের ইতিহাস নেই
অথবা এমনই ইতিহাস
আমাদের চোখমুখ ঢাকা
আমরা ভিখারি বারোমাস
পৃথিবী হয়তো বেঁচে আছে
পৃথিবী হয়তো গেছে মরে
আমাদের কথা কে-বা জানে
আমরা ফিরেছি দোরে দোরে।
কিছুই কোথাও যদি নেই
তবু তো কজন আছি বাকি
আয় আরো হাতে হাত রেখে
আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি।
লেখক পরিচিতি :
শঙ্খ ঘোষ (১৯৩২ - ২০২১):, অধুনা বাংলাদেশের বরিশালে। আধুনিক বাংলাসাহিত্যের একজন প্রধান কবি, প্রাবন্ধিক, অধ্যাপক। পড়াশুনো প্রেসিডেন্সি কলেজ ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। প্রথম কাব্যগ্রন্থ 'দিনগুলি রাতগুলি'। 'নিহিত পাতাল ছায়া', ‘বাবরের প্রার্থনা’, ‘পাজরে দাঁড়ের শব্দ’, ‘জলই পাষাণ হয়ে আছে’, ‘মুখ ঢেকে যায় বিজ্ঞাপনে’, ‘মূর্খ বড়ো, সামাজিক নয়’, ‘ধুম লেগেছে হৃৎ কমলে’, ‘গোটা দেশজোড়া জঊঘর’, ‘প্রতি প্রশ্নে কেঁপে ওঠে ভিটে’, ‘হাসিখুশি মুখে সর্বনাশ' ইত্যাদি। ছোটোদের জন্য লিখেছেন— ‘ছোট্ট একটা স্কুল’, ‘অল্পবয়স কল্পবয়স’, ‘সকালবেলার আলো’, ‘সুপুরিবনের সারি’, ‘শহর পথের ধুলো’ইত্যাদি। ‘কুম্তক’ ছদ্মনামে লিখেছেন 'শব্দ নিয়ে খেলা' ও 'কথা নিয়ে খেলা'। প্রবন্ধের বই হিসেবে ‘কালের মাত্রা ও রবীন্দ্র নাটক’, ‘ছন্দোময় জীবন’, ‘ভিন্ন রুচির অধিকার’, ‘এই শহরের রাখাল’, ‘ঐতিহ্যের বিস্তার’, ‘এ আমির আবরণ’, ‘ছন্দের বারান্দা' ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। কবির প্রাপ্ত নানা পুরস্কারের মধ্যে বিশেষ উল্লেখযোগ্য সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার, রবীন্দ্র পুরস্কার, কবীর সম্মান, সরস্বতী সম্মান এবং পদ্মভূষণ।
উৎস : ‘জলই পাষাণ হয়ে আছে’ কাব্যগ্রন্থ (২০০০ - ২০০৩) ।
বিষয় অল্প কথায়:
- কবির বেঁধে বেঁধে থাকার আহ্বান সাধারণ মানুষের প্রতি
- মূল আলোচ্য বিপন্ন সাধারণ মানুষের অবরুদ্ধ পথে একসঙ্গে এগিয়ে চলা
- সাধারণ মানুষের বাস্তব অবস্থা—কখনও পায়ের তলার মাটি ধ্বসে যায়, যুদ্ধবাজদের বোমারু বিমানে জীবনহানির সংকেত শোনায় প্রতিপদে হিমানীর বাঁধ সুলভ বাধা
- দিশাহারা, অস্তিত্বের সংকটে সাধারণ মানুষ—কারণ সামাজিক-রাজনৈতিক দুরবস্থা
- স্বপ্নময় ভবিষ্যতের আশা-আকাঙ্ক্ষা মৃত-বর্তমানের মৃত্যু আসন্ন
- ইতিহাসহীন-নিয়মনীতি তাড়িত সাধারণ মানুষ—ইতিহাসে থাকে শুধু রাষ্ট্রনেতা-শাসকরা
- পরিস্থিতির বিপন্নতার পরিবর্তনে, সমাজ-সভ্যতা ও নিজেদের অস্তিত্বের পুনরুদ্ধারে কাম্য সাধারণের একতা
নামকরণের খুঁটিনাটি :
- অবক্ষয়মান সমাজের বাস্তব রূপ দ্রষ্টব্য
- অত্যাচারিত মানুষের ভাব-ভাবনাকে বাণীরূপ দান
- ক্ষমতালিপ্সু সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধবাজদের সম্পদ প্রসারের বাসনায় যুদ্ধ হানাহানিতে তৎপরতা
- এর কুফল বর্তায় সাধারণ মানুষের ওপর।
- সাধারণ মানুষের উভয় সংকট পরিস্থিতি–বোমারু হানা, হিমানীর বাঁধের ন্যায় বন্ধন
- বিপর্যস্ত সাধারণের সমাজের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ
- সাধারণ মানুষের ইতিহাসে নাম আগে থেকেই ছিল না
- সাধারণের প্রাপ্য বলপূর্বক চাপানো নিয়ম-শৃঙ্খলা
- প্রতিকূলতা দূরীকরণ, পরিবর্তনের পথ সাধারণের মধ্যে একতা
- সাধারণেই চালায় সমাজ-রাষ্ট্র তারাই আনতে পারে পরিবর্তন
- ভাবনার নিরিখে সার্থকনামা
১. আমাদের ডান পাশে, বায়ে, মাথায়, পায়ে পায়ে কী আছে?
অথবা, আমাদের চারপাশে কী আছে?
আমরা দেশের হতভাগ্য মানুষ। আমাদের ডান পাশে রয়েছে ধ্বস -- তাই সেখানে পড়ে যাওয়ার বা গড়িয়ে যাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা।
বাঁয়ে গিরিখাদ -- তাই পিছলে পড়ে হাড়গোড় গুঁড়িয়ে যেতে পারে।
মাথার ওপর বোমারু বিমান -- তাই তার অগ্নিগোলায় পুড়ে ছিন্নভিন্ন হয়ে যাওয়া বিচিত্র নয়।
২. ‘পৃথিবী হয়তো বেঁচে আছে’ - এখানে ‘হয়তো’ শব্দটি কবি কোন প্রসঙ্গে ব্যবহার করেছেন ?
অথবা* ‘পৃথিবী হয়তো গেছে মরে’ - এমন সংশয়ের কারন কি ?
কবি শঙ্খ ঘোষ তাঁর ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’ কবিতায় এমন সংশয়পূর্ন উক্তিটি করেছেন ।
এই সংশয়ের কারন / ব্যবহারের কারণ:
৩. ‘আমাদের কথা কে বা জানে’ - আমরা কারা ? তাদের কোন না জানার কথা উল্লিখিত হয়েছে ?
কবি শঙ্খ ঘোষ রচিত ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’ কবিতা অনুসারে আমরা হল এ পৃথিবীর অগনিত অসহায় খেটে খাওয়া সাধারন মানুষ ।
না জানা কথা :
এ পৃথিবীর ইতিহাস আসলে ক্ষমতাবান শাসকের ইতিহাস ।শাসকেরা প্রতিনিয়ত তার গতি প্রকৃতি নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা করে । দুর্বল, অসহায়, সাধারন মানুষের কথা কেউ ভাবে না । তাদের জন্য জোটে অবহেলা, উপেক্ষা ও বিস্মৃতি । কবি এই ঐতিহাসিক সত্যকেই তুলে ধরেছেন ।
৪. আমাদের ইতিহাস নেই’ - কাদের ইতিহাস নেই ? একথা বলার কারণ কি ?
৫. ‘আমাদের চোখ মুখ ঢাকা’ - আমরা কারা ? একথা বলার কারন কি ?
কবি শঙ্খ ঘোষ রচিত ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’ কবিতা অনুসারে আমরা হল এ পৃথিবীর অগনিত অসহায় খেটে খাওয়া সাধারন মানুষ ।
একথা বলার কারণ :
৬. ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’ -- কোন্ পরিস্থিতিতে কবি কীভাবে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন?
৭. আামাদের কাছে পৃথিবী কেমন?
৮. ‘আমরা ভিখারী বারোমাস’ - আমরা কারা ? একথা বলার কারন কি ?
কবি শঙ্খ ঘোষ রচিত ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’ কবিতা অনুসারে আমরা হল এ পৃথিবীর অগনিত অসহায় খেটে খাওয়া সাধারন মানুষ ।
একথা বলার কারণ :
৯. ‘আমরা ফিরেছি দোরে দোরে’ - আমরা কারা ? একথা বলার কারন কি ?
কবি শঙ্খ ঘোষ রচিত ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’ কবিতা অনুসারে আমরা হল এ পৃথিবীর অগনিত অসহায় খেটে খাওয়া সাধারন মানুষ ।
একথা বলার কারণ :
১০. 'আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি।'- কবির এই আকুল আহ্বান কেন?
অথবা, আমাদের চারপাশে কী আছে?
আমরা দেশের হতভাগ্য মানুষ। আমাদের ডান পাশে রয়েছে ধ্বস -- তাই সেখানে পড়ে যাওয়ার বা গড়িয়ে যাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা।
বাঁয়ে গিরিখাদ -- তাই পিছলে পড়ে হাড়গোড় গুঁড়িয়ে যেতে পারে।
মাথার ওপর বোমারু বিমান -- তাই তার অগ্নিগোলায় পুড়ে ছিন্নভিন্ন হয়ে যাওয়া বিচিত্র নয়।
পায়ে পায়ে হিমানীর বাঁধ - তাই পার হওয়া সম্ভবপর নয়, কিংবা, হিমে জমে যাওয়া সম্ভব। কাজেই বেঁচে থাকা বড়োই বিস্ময়কর বিষয়।
২. ‘পৃথিবী হয়তো বেঁচে আছে’ - এখানে ‘হয়তো’ শব্দটি কবি কোন প্রসঙ্গে ব্যবহার করেছেন ?
অথবা* ‘পৃথিবী হয়তো গেছে মরে’ - এমন সংশয়ের কারন কি ?
কবি শঙ্খ ঘোষ তাঁর ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’ কবিতায় এমন সংশয়পূর্ন উক্তিটি করেছেন ।
এই সংশয়ের কারন / ব্যবহারের কারণ:
আজকের যুদ্ধ ও দাঙ্গাবিধ্বস্থ পৃথিবীতে মানুষ দিশেহারা, তাঁর হাত পা বাঁধা । গৃহহীন, ইতিহাস বিস্মৃত এই নিরন্ন মানুষগুলি নিজের ভাবী প্রজন্মকে রক্ষা করতে ব্যর্থ । জীবনের অর্থহীনতায় বেঁচে থাকার আশা সে হারিয়েছে । তাই সমস্ত পৃথিবীটা তার কাছে জীবান্মৃত বলে মনে হয় ।
৩. ‘আমাদের কথা কে বা জানে’ - আমরা কারা ? তাদের কোন না জানার কথা উল্লিখিত হয়েছে ?
কবি শঙ্খ ঘোষ রচিত ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’ কবিতা অনুসারে আমরা হল এ পৃথিবীর অগনিত অসহায় খেটে খাওয়া সাধারন মানুষ ।
না জানা কথা :
এ পৃথিবীর ইতিহাস আসলে ক্ষমতাবান শাসকের ইতিহাস ।শাসকেরা প্রতিনিয়ত তার গতি প্রকৃতি নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা করে । দুর্বল, অসহায়, সাধারন মানুষের কথা কেউ ভাবে না । তাদের জন্য জোটে অবহেলা, উপেক্ষা ও বিস্মৃতি । কবি এই ঐতিহাসিক সত্যকেই তুলে ধরেছেন ।
৪. আমাদের ইতিহাস নেই’ - কাদের ইতিহাস নেই ? একথা বলার কারণ কি ?
কবি শঙ্খ ঘোষ তাঁর ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’ কবিতায় উদ্ধৃত হয়েছে সমাজের অসহায় বঞ্চিত, নিপীড়িত, অবহেলিত মানুষের ইতিহাস নেই ।
একথা বলার কারন : গতানুগতিক ধারনা অনুযায়ী ইতিহাসের পৃষ্ঠায় ঠাই পায় রাজ রাজা, ঐশ্বর্যবান ব্যক্তিরা । অতি ষাধারন মানুষের কথা ইতিহাস মনে রাখে না । বিশেষত সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষ , যারা নিত্য জীবন সংগ্রামের দ্বন্দ্বে দোলায়িত ইতিহাস তাদের দিকে ফিরে তাকায় না । নীরব জীবন সংগ্রাম তাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ । ইতিহাস তাদের উপর বিবেচনার উজ্জ্বল আলোক নিক্ষেপ করে না । তাই বঞ্চিত ও অসহায় মানুষের কোনো ইতিহাস নেই ।
৫. ‘আমাদের চোখ মুখ ঢাকা’ - আমরা কারা ? একথা বলার কারন কি ?
কবি শঙ্খ ঘোষ রচিত ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’ কবিতা অনুসারে আমরা হল এ পৃথিবীর অগনিত অসহায় খেটে খাওয়া সাধারন মানুষ ।
একথা বলার কারণ :
যুদ্ধবাজরা পৃথিবীকে বধ্যভূমি করে তুলেছে । নিরীহ জনগনকে চোখমুখ বেঁধে মৃত্যুর প্রতিক্ষায় সেখানে দাঁড় করিয়ে রেখেছে । সাধারন মানুষ যাতে প্রতিবাদ না করতে পারে , তাই চোখ মুখ বেঁধে রাখা হয়েছে । এককথায় গনতন্ত্রের কন্ঠ্যরোধ করে জনগনের প্রতিবাদী বিবেককে হত্যার চেষ্টায় এই শব্দগুচ্ছ ব্যবহৃত ।
৬. ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’ -- কোন্ পরিস্থিতিতে কবি কীভাবে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন?
কবি উপলব্ধি করেছেন, একটা হতাশাজনক নিরুপায় অবস্থার মধ্য দিয়ে মানুষ চলেছেন। চারপাশে প্রচন্ড বাধা-বন্ধকতা-হুংকার। প্রতিবাদ করা যায় না। প্রতিরোধ করা যায় না। এক আজব অক্টোপাস চারদিক থেকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে অকেজো করে দেওয়ার জন্য উদ্যত। তাই চলার-বাঁচার কোনো পথ নেই - উপায় নেই। অগত্যা? কবি জনমানুষকে ডাক দিচ্ছেন, সংকটময় মুহূর্তে সবাই একতাবদ্ধ হয়ে, পরস্পরকে সংকল্পের বাঁধনে বেঁধে বেঁধে জীবন বাঁচাতে।
৭. আামাদের কাছে পৃথিবী কেমন?
পৃথিবী, অর্থাৎ জগৎ। মানুষ নিজেকে পৃথক রেখে বাকি যা যা দেখে, সেটাই পৃথিবী। আবার প্রত্যেক মানুষের ব্যক্তিগত পৃথিবীও একটা থাকে। তারপরেও গোটা পৃথিবীর মধ্যে সেও থাকে। মানুষের চারপাশের সেই যে জগৎ, সেই জগৎটা দেশের জনমানুষের কাছে অদ্ভুত হয়ে গেছে। সেখানে জীবন নেই। যদিও আছে, সেটা না থাকারই মতো। অর্থাৎ জীবন বলতে যে স্বতঃস্ফূর্ত প্রাণোচ্ছলতা থাকে, তা নেই। তাই কবির বিমর্ষ বেদনা--আমাদের 'পৃথিবী হয়তো বেঁচে আছে/ পৃথিবী হয়তো গেছে মরে’।
৮. ‘আমরা ভিখারী বারোমাস’ - আমরা কারা ? একথা বলার কারন কি ?
কবি শঙ্খ ঘোষ রচিত ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’ কবিতা অনুসারে আমরা হল এ পৃথিবীর অগনিত অসহায় খেটে খাওয়া সাধারন মানুষ ।
একথা বলার কারণ :
যুদ্ধ ও দাঙ্গাবিধ্বস্থ পৃথিবীতে মানুষ দিশেহারা, তাঁর হাত পা বাঁধা । যুদ্ধবাজরা পৃথিবীকে বধ্যভূমি করে তুলেছে । নিরীহ জনগনকে চোখমুখ বেঁধে মৃত্যুর প্রতিক্ষায় সেখানে দাঁড় করিয়ে রেখেছে । সাম্রাজ্যবাদী শক্তির শোষণে বঞ্চিত, শোষিত জনগন জীবিকা হারিয়ে ভিখারীতে পরিনত হয়েছে ।
৯. ‘আমরা ফিরেছি দোরে দোরে’ - আমরা কারা ? একথা বলার কারন কি ?
কবি শঙ্খ ঘোষ রচিত ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’ কবিতা অনুসারে আমরা হল এ পৃথিবীর অগনিত অসহায় খেটে খাওয়া সাধারন মানুষ ।
একথা বলার কারণ :
দুর্যোগে সব হারানো অসহায় মানুষ সাহায্যের আশায় মানুষেরই দরজায় গিয়ে উপস্থিত হয়েছে, কিন্তু কেউ তাদের দিকে ফিরে তাকায় নি । জীবন যাপনের গøানি নিয়ে তাকে দরজায় দরজায় ঘুরতে হয়েছে ।
১০. 'আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি।'- কবির এই আকুল আহ্বান কেন?
কবি শঙ্খ ঘোষ দেখেছেন চারদিকে মারণের কুশলী আয়োজন। দেখেছে, কোথাও পথ নেই, আশ্রয় নেই। ছড়ানো রয়েছে শিশুদের শব। পদে পদে মৃত্যুর ইশারা। মানুষের নেই-ইতিহাসটা এরকম। ভিখারি হয়ে গেছে মানুষ। চোখমুখ বাঁধা। মানুষের খোঁজ রাখে না কেউ। শুধু দোরে দোরে জীবনকে খুঁজে ফেরাচলে। এসব নেই-র মধ্যে যে ক-জন এখনও প্রাণ ধরে আছে, কবি ডেকেছেন তাদের - হাতে হাত রেখে একতায় আরও তারা সংঘবদ্ধ হোক -এখনও জীবন বাকি আছে।
No comments