Page Nav

HIDE

Classic Header

{fbt_classic_header}

NEW :

latest

অনন্য শরৎচন্দ্র :

  রবি যখন মধ্য গগনে তখন চন্দ্রের উদয়― বলাবাহুল্য সেই চন্দ্র, শরৎচন্দ্র। রবিতাপে ঝলসে গেল না শরৎচন্দ্রের স্বকীয়তা। ১৯০৩-এ 'চোখের বালি&#...

 

রবি যখন মধ্য গগনে তখন চন্দ্রের উদয়― বলাবাহুল্য সেই চন্দ্র, শরৎচন্দ্র। রবিতাপে ঝলসে গেল না শরৎচন্দ্রের স্বকীয়তা। ১৯০৩-এ 'চোখের বালি' প্রকাশ আর ঐ একই সময়ে শরৎচন্দ্রের ‘মন্দির' গল্প কুম্ভলীন পুরস্কার পায়। আসলে বঙ্কিমচন্দ্র ও রবীন্দ্রনাথের অবলম্বিত পথ থেকে সরে এলেন শরৎচন্দ্র। ১৯১০-এ রবীন্দ্রনাথের ‘গোরা’ প্রকাশিত হয়ে গেছে আর শরৎচন্দ্রের প্রথম মুদ্রিত গল্প ‘বড়দিদি’ প্রকাশিত হয় ১৯১৩তে। শরৎচন্দ্র তাঁর পূর্বসূরীদের অবলম্বিত অভিজাত সমাজের কাছ থেকে সরে এলেন। শরৎচন্দ্র জানালেন—
‘সংসারে যারা শুধু দিলে, পেলে না কিছুই, যারা বঞ্চিত, যারা দুর্বল, উৎপীড়িত, মানুষ হয়েও মানুষ যাদের চোখের জলের কখনও হিসাব নিলে না, নিরুপায় দুঃখময় জীবনে যারা কোনদিন ভেবেই পেলে না, সমস্ত থেকেও কেন তাদের কিছু অধিকার নাই...এদের বেদনাই দিলে আমার মুখ খুলে, এরাই পাঠালে আমাকে মানুষের কাছে মানুষের নালিশ জানাতে।'

     পরিচয় :     
        শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ১৮৭৬ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ সেপ্টেম্বর দেবানন্দপুর গ্রামে এক দরিদ্র ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম মতিলাল চট্টোপাধ্যায় ও মাতার নাম ভুবনমোহিনী দেবী। পাঁচ ভাই আর বোনের মধ্যে শরৎচন্দ্র ছিলেন দ্বিতীয়। তার দিদি অনিলা দেবী ছাড়াও প্রভাসচন্দ্র ও প্রকাশচন্দ্র নামে তার দুই ভাই ও সুশীলা দেবী নামে তার এক বোন ছিল। শরৎচন্দ্রের ডাকনাম ছিল ন্যাঁড়া। শরৎচন্দ্রের পাঁচ বছর বয়সকালে মতিলাল তাকে দেবানন্দপুরের প্যারী পণ্ডিতের পাঠশালায় ভর্তি করে দেন, যেখানে তিনি দু-তিন বছর শিক্ষালাভ করেন। এরপর ভাগলপুর শহরে থাকাকালীন তার মামা তাকে স্থানীয় দুর্গাচরণ বালক বিদ্যালয়ে ছাত্রবৃত্তিতে ভর্তি করিয়ে দেন। অর্থের অভাবে কলেজ জীবনের শিক্ষা শেষ হয়নি । এই সময় প্রতিবেশী বিভূতিভূষণ ভট্টের বাড়িতে একটি সাহিত্যসভার আয়োজন করেছিলেন, যার ফলশ্রুতিতে তিনি বড়দিদি, 'দেবদাস', চন্দ্রনাথ, শুভদা ইত্যাদি উপন্যাস এবং 'অনুপমার প্রেম', আলো ও ছায়া, 'বোঝা', হরিচরণ' ইত্যাদি গল্প রচনা করেন। এরপর তাকে আর ফিরে তাকাতে হয়নি । একর পর এক সাহিত্য খ্যাতি পান । ১৯৩৮ খ্রিষ্টাব্দের ১২ জানুয়ারি শল্য চিকিৎসক ললিতমোহন বন্দ্যোপাধ্যায় তার দেহে অস্ত্রোপচার করেন, কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। চার দিন পর ১৬ জানুয়ারি সকাল দশটায় শরৎচন্দ্র শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন ।

     ছদ্মনাম :   
       পত্রিকা ছোট, লেখক কম, তাই পত্রিকার স্বার্থে শরৎচন্দ্রকে তিনটি নামে লিখতে হয়েছে। ১৯১৩ সালের ১২ ফেব্রুয়ারিতে রেঙ্গুন থেকে ফণীন্দ্রনাথ পালকে এক চিঠিতে লিখেছেন, ‘আমার তিনটে নাম ‘ ----
  •  সমালোচনা প্রবন্ধ প্রভৃতি- অনিলা দেবী
  • ছোটগল্প- শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়।
  • বড়গল্প- অনুপমা।
এছাড়াও তিনি শ্রীশ্রীকান্ত শর্মা ছদ্মনামে ‘শ্রীকান্ত’ উপন্যাস রচনা করেন । 

    রচনাসমূহ :   
প্রথম রচনা :
(a) প্রথম উপন্যাস 
 বড়দিদি (১৯১৩), 'ভারতী' পত্রিকায় প্রকাশিত হয় (১৯০৭)।
(b) প্রথম গল্প "মন্দির" এর জন্য তিনি 'কুন্তলীন'(১৯০৩) পুরষ্কার পান ।
(c) শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের প্রথম প্রবন্ধগ্রন্থ নারীর মূল্য প্রথম প্রকাশিত হয় ১৩২০ সনের বৈশাখ থেকে আষাঢ় এবং ভাদ্র থেকে আশ্বিন সংখ্যা 'যমুনা' পত্রিকায়। 

    উপন্যাস সমূহ :   
  • ‘বড়দিদি’  (১৯১৩)
  • ‘ বিরাজবৌ’ (১৯১৪)
  • ‘পরিণীতা’ (১৯১৪)
  • ‘পন্ডিতমশাই’ (১৯১৪)
  • ‘চন্দ্রনাথ’ (১৯১৬)
  • ‘পল্লীসমাজ’ (১৯১৬)
  • ‘অক্ষরণীয়া’ (১৯১৬)
  • ‘ বৈকুণ্ঠের উইল’ (১৯১৬)
  • ‘দেবদাস’ (১৯১৭)
  • ‘চরিত্রহীন’ (১৯১৭)
  • ‘শ্রীকান্ত’ (চার খন্ড - ১৯১৭,১৯১৮,১৯২৭,১৯৩৩)
  • ‘দত্তা’ (১৯১৮)
  • ‘বামুনের মেয়ে’ (১৯২০)
  • ‘গৃহদাহ’ (১৯২০)
  • ‘দেনাপাওনা’ (১৯২৩)
  • ‘নববিধান’ (১৯২৪)
  • ‘পথের দাবী’ (১৯২৬)
  • ‘শেষ প্রশ্ন’ (১৯৩১)
  • ‘বিপ্রদাস’ (১৯৩৫)
  • ‘শুভদা’ (১৯৩৮)
  • ‘শেষের পরিচয়’ (১৯৩৯)

      ক্রমানুসারে উপন্যাসগুলি মনে রাখার কৌশল :     
"বড়দিদি",  "বিরাজ বউ" ও "পরিণীতা" -  "পণ্ডিতমশাই"কে নিয়ে  "চন্দ্রনাথ"-এর সঙ্গে "পল্লীসমাজ"-এর সংস্কারের জন্য আলোচনায় বসলেন । কিন্তু "অক্ষরণীয়া" "কৃষ্ণকান্তের উইল" বার করে দেখালেন "দেবদাস" ও "চরিত্রহীন" হওয়ায়  "শ্রীকান্ত"-কে সমস্ত সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে । এখন উপায় না পেয়ে  "দত্তা" "বামুনের মেয়ে" সেজে সংসারে এসে "গৃহদাহ" করে সঠিক সময়ে  অনেক বেশি"দেনা পাওনা" আদায় করলেন । বিষয়টা বিধানের (‘‘নববিধান”) ভালো লাগল না, তিনি  এই অনৈতিক দাবীর(‘‘পথের দাবী”) বিষয়ে ‘‘শেষপ্রশ্ন” করলেন বিপ্রদাসকে । কোনো উত্তর না আসায় ‘‘শুভদা” শেষে  পরিচয় (“শেষের পরিচয়”) করিয়ে দিলেন ।

   প্রবন্ধগ্রন্থ :    
১. তরুণের বিদ্রোহ (১৯১৯)
২. নারীর মূল্য (১৯৩০ - দিদি অনিলা দেবীর নামে প্রকাশিত)
৩. স্বদেশ ও সাহিত্য (১৯৩২)

     উপন্যাসের নাট্যরূপ :    
১. ষোড়শী, ১৯২৮ (দেনাপাওনা)
২. রমা, ১৯২৮ (পল্লীসমাজ)
৩. বিরাজ বউ, ১৯৩৪ (বিরাজ বউ)
৪. বিজয়া, ১৯৩৫ (দত্তা)

      গল্পসমূহ :    
           ‘রামের সুমতি’, ‘বিন্দুর ছেলে’, ‘আঁধারের​ আলো’, ‘ ছবি’, ‘পরেশ’, ‘লালু’, ‘মহেশ’, ‘ছেলেধরা’, ‘অভাগীর স্বর্গ’, ‘মামলার ফল’, ‘
একাদশীর বৈরাগ্য’,  ‘কাশিনাথ,’ ইত্যাদি ।

    আলোচনা :   
  • মুজফ্‌ফরপুরে বসেই ‘ব্রহ্মদৈত্য’ নামে এক উপন্যাস লেখা শুরু করে শরৎচন্দ্র।
  • "মন্দির" গল্পটি মামা সুরেন্দ্রনাথ গঙ্গোপাধ্যায়ের নামে প্রকাশিত ।
  • মৃত্যুর পরে প্রকাশিত: শুভদা (১৯৩৮), শেষের পরিচয় (১৯৩৯) ।
  •  ৪ পর্বের "শ্রীকান্ত" তাঁর জীবনভাস্য । এই গ্রন্থই লেখকের​ "Magnum Opus"
  • "শ্রীকান্ত"-র ১ম, ২য়, ৩য় পর্ব "ভারতবর্ষ" পত্রিকায় এবং ৪র্থ পর্ব "বিচিত্রা" পত্রিকায় প্রকাশিত ।
  • শ্রীকান্ত: এটি শরৎচন্দ্রের আত্মজীবনীমূলক উপন্যাস।  এটি তার শ্রেষ্ঠ রচনা। এতে তাঁর নাম রচিত হয় শ্রীশ্রীকান্ত শর্মা।এই উপন্যাসের প্রধান চরিত্রগুলো হল: রাজলক্ষী, শ্রীকান্ত, ইন্দ্রনাথ, যদুনাথ, সুনন্দা, কুশারী, অন্নদা দিদি, ও অভয়া। ইন্দ্রনাথ বাংলা সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ কিশোর চরিত্র।
  • পথের দাবি (১৯২৬): এই উপন্যাসটি সরকার কতৃর্ক বাজেয়াপ্ত হয়।এটি একটি রাজনৈতিক উপন্যাস। এক গুপ্ত বিপ্লবী দলের নায়ক সব্যসাচী এই উপন্যাসের প্রধান চরিত্র।
  • ‘দেনা-পাওনা উপন্যাসটি ১৯০১ সালে রচিত হলেও প্রকাশিত হয় ১৯১৭ সালে।
  • নিষ্কৃতি-  তাঁর একটি ক্ষুদ্র উপন্যাস।
  • "শেষের পরিচয়" উপন্যাসটি অসমাপ্ত রেখেই তিনি মারা যান । সেটি সমাপ্ত করেন রাধারাণী দেবী ।
  • ‘আগামীকাল ও ‘জাগরণ’ অসমাপ্ত উপন্যাস।
  • জীবিত কালে তাঁর শেষ উপন্যাস​ "বিপ্রদাস" ।
  • ‘বিরাজ-বৌ’উপন্যাসের  নাট্যরূপ দিয়েছিলেন ভূপেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিনীত হয় স্টার থিয়েটারে।
  • ভারতী’তে ‘দেনা-পাওনা’র নাট্যরূপ দিয়েছিলেন শিবরাম চক্রবর্তী, নাম ‘ষোড়শী’।
  • পল্লী সমাজ উপন্যাসের নাট্যরূপ ‘রমা’ নামে তিনি প্রকাশ করেন। 

     চরিত্র :    
  • ‘বড়দিদি’:  চরিত্র:  মাধবী, সুরেন্দ্রনাথ।
  • ‘গৃহদাহ’ :  চরিত্র:  সুরেশ, অচলা ও মহিম।
  • ‘পথের দাবি’: নায়ক সব্যসাচী এই উপন্যাসের প্রধান চরিত্র।
  • ‘চরিত্রহীন’: এর প্রধান চরিত্রসমূহ: সাবিত্রী, কিরণময়ী।
  • ‘দেবদাস’ : প্রধান চরিত্র: দেবদাস, পার্বতী, চন্দ্রমুখী।
  • ‘দেনা-পাওন ‘:  চরিত্র: জীবানন্দ ও ষোড়শী।
  • ‘দত্তা’ : চরিত্র: নরেন ও বিজয়া।
  • নিষ্কৃতি’: চরিত্র: গিরিশ, রমেশ, শৈলজা।
  • ‘পল্লী সমাজ’ :  চরিত্র: রমা, রমেশ, বেণী, বলরাম।
  • ‘বিপ্রদাস’ : চরিত্র: বিপ্রদাস, দ্বিজদাস, বন্দনা।
  • ‘শেষপ্রশ্ন’ : চরিত্র: কমল, অজিত, শিবনাথ, মনোরমা।
     বাংলা কথাসাহিত্যে শরৎচন্দ্রের বিশিষ্টতা :   
        শরৎচন্দ্র বাঙালি ঔপন্যাসিকদের মধ্যে জনপ্রিয়তম। আবেগ আতিশয্য, পারিবারিক জীবনের রূপাঙ্কন, পল্লিজীবনের বাস্তব চিত্র তাঁর রচনায় সুলভ। নারী চরিত্রে ব্যক্তিত্ব ও ভাবাবেগপূর্ণ নেতৃত্বের আদর্শ, পুরুষ চরিত্রে ঔদাসীন্যের প্যাটার্ন গড়ে তুলেছিলেন তিনি। নারীর মনুষ্যত্ব ও সামাজিক সংস্কারের দ্বন্দ্ব তাঁর উপন্যাসে দরদের সঙ্গে চিত্রিত।

      শরৎচন্দ্রের ঔপন্যাসিক প্রবণতার প্রধান দিকগুলির পরিচয় :     
(ক) শরৎচন্দ্র অত্যন্ত আবেগপ্রবণ শিল্পী। 
(খ) তিনি পারিবারিক জীবনের রূপকার। 
(গ) সামাজিক সংস্কার ও নীতিবোধ—এই বিশিষ্ট প্রশ্ন শরৎচন্দ্রের উপন্যাসের কেন্দ্রীয় সমস্যা। 
(ঘ) শরৎচন্দ্রের নারীচরিত্র তাঁর জনপ্রিয়তার অন্যতম কারণ। 
(ঙ) শরৎচন্দ্র পুরুষের পৌরুষ—কাঠিন্যের ওপরে বেশি গুরুত্ব বা মাহাত্ম্য আরোপ করেননি। 
(চ) পল্লিগ্রামের পটভূমিকা তাঁর বেশিরভাগ উপন্যাসেই বিস্তৃত ।

    ব্যাতিক্রমী সৃষ্টি :   
        'পথের দাবী' (১৯২৬) উপন্যাসটি শরৎচন্দ্রের ব্যতিক্রমী সৃষ্টি। উপন্যাস শিল্পের দিক থেকে অত্যুচ্চ স্থানের অধিকারী না হলেও 'পথের দাবী' উল্লেখযোগ্য রাজনৈতিক ভূমিকার দিক থেকে। বঙ্কিমচন্দ্রের ‘আনন্দমঠ' বা রবীন্দ্রনাথের ‘গোরা’র মতো কোনো স্পষ্ট গভীর বাণীবহ হয়ে না উঠলেও ঔপন্যাসিক হিসেবে শরৎচন্দ্রের জনপ্রিয়তা 'পথের দাবী'র প্রভাব ছড়াতে সাহায্য করেছিল। ‘পথের দাবী’র রাজনৈতিক ভাবনা অপরিণত, আবেগপ্রধান মনে হলেও এই উপন্যাসের অন্তর্গত বৈপ্লবিক উত্তেজনা এবং গোপন রাজনীতির রোমাঞ্চকতা এককালে বাঙালি তরুণদের বিশেষভাবে আকর্ষণ করেছে।

    শরৎচন্দ্রের শ্রেষ্ঠ উপন্যাস :    
        চার খণ্ডে বিভক্ত ‘শ্রীকান্ত'-ই শরৎচন্দ্রের শ্রেষ্ঠ উপন্যাস। এই গ্রন্থে একটি নব্য আঙ্গিকের প্রবর্তন করতে চেয়েছেন শরত্চন্দ্র। উপন্যাসটি ভ্রমণকাহিনির রীতিতে রচিত। শ্রীকাত্তের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার সূত্রে জীবনের বিচিত্র ঘটনা এবং নানা জাতীয় মানুষ ভীড় করে এসেছে। অধিকাংশ চরিত্রই সুচিত্রিত। শ্রীকান্ত ভবঘুরে প্রকৃতির মানুষ, তার ব্যক্তিত্বের মধ্যে নিরাসক্ত যেন বাসা বেঁধেছিল। অথচ প্রেম-সহানুভূতির বন্ধনে নানা মানুষের সঙ্গে সে জড়িত। আসক্তি-নিরাসক্তির আলোছায়ায় তার চরিত্র অপূর্ব হয়ে উঠেছে।

   শরৎচন্দ্রের বাংলা কথাসাহিত্যে জনপ্রিয়তার কারণ :    
        মানবজীবনের সুখদুঃখ ও অশ্রু-বেদনাকে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের মতো সহানুভূতির রসে ডুবিয়ে এমন স্নিগ্ধমধুর ও বেদনাবিধুর কাহিনি আর কেউ লিখতে পারেননি। বাস্তবজীবনকে গ্রহণ করে অতি বিচিত্র কৌশলে তার সঙ্গে তিনি রোমান্সের অদ্ভুত মিল ঘটিয়েছেন। শরৎচন্দ্রের সৃষ্ট চরিত্রগুলি দুঃখ-লাঞ্ছনা ও বেদনার দ্বারাই পাঠকচিত্তে আপন অধিকার স্থাপন করে। 

   শরৎচন্দ্র কি বাস্তববাদী লেখক?   
      শরৎচন্দ্র বাস্তব উপাদান গ্রহণ করলেও বাস্তববাদী লেখক নন। তিনি আদর্শবাদী ও রোমান্টিক ঔপন্যাসিক, কিন্তু রচনার গুণে বাস্তবের পটভূমিকাকে এত সজীব করে তুলেছেন যে, তাঁর এ ছদ্মবেশ সহজে ধরা পড়ে না।

1 comment