সুবর্ণযুগ ’ রূপে অভিহিত ষোড়শ শতকের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি ছিলেন চণ্ডীদাসের ভাবশিষ্য জ্ঞানদাস । আনুমানিক ১৫৩০ খ্রিস্টাব্দে কিংবা...
সুবর্ণযুগ’ রূপে অভিহিত ষোড়শ শতকের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি ছিলেন চণ্ডীদাসের ভাবশিষ্য জ্ঞানদাস। আনুমানিক ১৫৩০ খ্রিস্টাব্দে কিংবা তার কাছাকাছি কোন এক সময়ে জ্ঞানদাস বর্ধমান জেলার কাদড়া গ্রামের এক ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি নিত্যানন্দের গণ-ভুক্ত ছিলেন এবং তৎপত্নী জাহ্নবী দেবীর ভাবশিষ্য ছিলেন। ষোড়শ শতকের শেষ দিকে অনুষ্ঠিত খেতুরীর মহোৎসবে তিনি উপস্থিত ছিলেন। তাঁর রচনা থেকে অনুমান করা যায় তিনি চৈতন্যদেবের জীবৎকালেই যদিবা জন্মগ্রহণ করেছিলেন, কিন্তু তিনি চৈতন্যদেবকে দেখেন নি।
পদ পরিচয়ঃ
গৌরচন্দ্রিকাঃ ➤‘সহচর অঙ্গে গোরা অঙ্গ হেলাইয়া’
পূর্বরাগঃ ➤ ‘আলো মুঞি জানো না’
➤ ‘ঘরে যাইতে পথ মোর হৈল অফুরান’
➤‘দেইখ্যা আইলাম তারে’
অভিসারঃ ➤ ‘ঘন অন্ধকার ভূজগ ভয় শতশত’ / তবু নাহি মানয়ে ভীত’
➤ ‘মেঘ যামিনী অতিঘন আন্ধিয়ার’
রূপানুরাগঃ ➤ ‘রূপ লাগি আখি ঝুরে গুনে মন ভোর’
আক্ষেপানুরাগঃ ➤ ‘সুখের লাগিয়া এঘর বাঁধিনু / অনলে পুড়িয়া গেল’ ।
পূর্বরাগঃ ➤ ‘আলো মুঞি জানো না’
➤ ‘ঘরে যাইতে পথ মোর হৈল অফুরান’
➤‘দেইখ্যা আইলাম তারে’
অভিসারঃ ➤ ‘ঘন অন্ধকার ভূজগ ভয় শতশত’ / তবু নাহি মানয়ে ভীত’
➤ ‘মেঘ যামিনী অতিঘন আন্ধিয়ার’
রূপানুরাগঃ ➤ ‘রূপ লাগি আখি ঝুরে গুনে মন ভোর’
আক্ষেপানুরাগঃ ➤ ‘সুখের লাগিয়া এঘর বাঁধিনু / অনলে পুড়িয়া গেল’ ।
কবি প্রতিভার পরিচয়ঃ
(1) জ্ঞানদাস ভাবে ও ভাষায় প্রধানতঃ গুরু চণ্ডীদাসের অনুসারী হলেও ভাষা ব্যবহারে তিনি গুরুর মত উদাসীন ছিলেন না, তিনি ছিলেন সচেতন ভাষাশিল্পী।
(2) জ্ঞানদাসের অন্ততঃ দ্বি-শতাধিক পদ আমরা পাই। এই পদগুলি যেমন উৎকর্ষ বিচারে তেমনি বিষয় বৈচিত্র্যেও তিনি অগ পদকর্তাদের কৃতিত্বকে ম্লান করে দিয়েছেন।
(3) মিলন ও আক্ষেপানুরাগের পদে জ্ঞানদাসের অনবদ্য অমৃত সৌধ নির্মিত ।
(1) জ্ঞানদাস ভাবে ও ভাষায় প্রধানতঃ গুরু চণ্ডীদাসের অনুসারী হলেও ভাষা ব্যবহারে তিনি গুরুর মত উদাসীন ছিলেন না, তিনি ছিলেন সচেতন ভাষাশিল্পী।
(2) জ্ঞানদাসের অন্ততঃ দ্বি-শতাধিক পদ আমরা পাই। এই পদগুলি যেমন উৎকর্ষ বিচারে তেমনি বিষয় বৈচিত্র্যেও তিনি অগ পদকর্তাদের কৃতিত্বকে ম্লান করে দিয়েছেন।
জ্ঞানদাসকে চণ্ডীদাসের ভাবশিষ্য বলা হয় । কারণ— ভাবে-ভাষায় প্রকাশরীতিতে উভয়ের মধ্যে সাদৃশ্য বর্তমান। চণ্ডীদাসের মতো জ্ঞানদাসও প্রেমের কবি, দুঃখের কবি, সহজ ভাষায় সহজ ভাবের কবি।
ক) জ্ঞানদাসের পদ অতি মাত্রায় রোমাণ্টিক।
খ) জ্ঞানদাসের পদে রয়েছে রূপ ও অরূপের সমন্বয়।
গ) তিনি বাংলা ও ব্রজবুলি ভাষায় পদ রচনা করেছেন ।
ঘ) জ্ঞানদাসের পদ স্নিগ্ধ মাধুর্যের অবিরল উৎসরনে বিশেষভাবে বিশিষ্টতা লাভ করেছে ।
এক নজরে জ্ঞানদাস |
1. আনুমানিক ১৫৩০ খ্রিষ্টাব্দে জ্ঞানদাস বর্ধমান জেলার কাটোয়ার দশ মাইল পশ্চিমে কাঁদরা গ্রামের এক
ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহন করেন ।
2. জ্ঞানদাস বৈষ্ণব পদাবলীর তিনটি যুগ বিভাগের মধ্যে চৈতন্য পরবর্তী যুগের কবি ।3. জ্ঞানদাস নিত্যানন্দের গণভুক্ত ছিলেন এবং তৎপত্নী জাহ্নবী দেবীর ভাবশিষ্য ছিলেন ।
4. ষোড়শ শতকের শেষ দিকে জ্ঞানদাস খেতুরী মহোৎবে উপস্থিত ছিলেন ।
5. জ্ঞানদাস শ্রীকৃষ্ণের বাল্যলীলা, নৌকাবিলাস, দানখন্ড ইত্যাদি বিষয়ে পদ রচনা করেন ।
6. জ্ঞানদাস আক্ষেপানুরাগ পর্যায়ের পদ রচনায় শ্রেষ্ঠ ।
7. জ্ঞানদাসকে চন্ডীদাসের ভাবশিষ্য বলা হয় ।
8. ‘পদ কল্পতরু’তে জ্ঞানদাসের ভূমিকায় পাওয়া পদের সংখ্যা ১৮৬টি ।
9. মনোধর্ম ও কবিতার আঙ্গিক নির্মিতির সাদৃশ্যে জ্ঞানদাসকে চন্ডিদাসের ভাবশিষ্য বলা হয় ।
10. শ্রী সুকুমার ভট্টাচার্য কর্তৃক আবিষ্কৃত ‘যশোদার বাৎসল্য’ নামে পুঁথিটি জ্ঞানদাসের ভনিতায় ২০টি পদ স্থান পেয়েছে ।
Very helpful.Thanks.
ReplyDeleteসুন্দর তথ্য।
ReplyDelete