Page Nav

HIDE

Classic Header

{fbt_classic_header}

NEW :

latest

‘দাম’ গল্পের আলোচনা ও প্রশ্নোত্তর :

নবম শ্রেণীর ‘সাহিত্য সঞ্চয়ন’ বইয়ের প্রতিটি বিষয় আমাদের ওয়েবসাইটে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে । আজকের আলোচনা ‘দাম’ । ‘দাম’                    ...

নবম শ্রেণীর ‘সাহিত্য সঞ্চয়ন’ বইয়ের প্রতিটি বিষয় আমাদের ওয়েবসাইটে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে । আজকের আলোচনা ‘দাম’ ।

‘দাম’
                                           -- নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়
    লেখক পরিচিতি :    
    নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় (১৯১৭–১৯৭০) : জন্ম দিনাজপুরে। দিনাজপুর, ফরিদপুর, বরিশাল এবং কলকাতায় শিক্ষাজীবন অতিবাহিত করেন। বাংলা সাহিত্যের খ্যাতনামা ছোটোগল্পকার ও ঔপন্যাসিক। তাঁর রচিত বিখ্যাত গল্পগ্রন্থগুলির মধ্যে রয়েছে— বীতংস, দুঃশাসন, ভোগবতী প্রভৃতি। উপনিবেশ, বৈজ্ঞানিক,শিলালিপি, লালমাটি, সম্রাট ও শ্রেষ্ঠী, পদসঞ্ঝার তার রচিত জনপ্রিয় উপন্যাস। শিশু ও কিশোরদের জন্য তাঁর অন্যতম স্মরণীয় সৃষ্টি টেনিদাচরিত্র।

     উৎস :       
        নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়-এর ‘দাম’ ছোটোগল্পটি লেখকের ‘এগজিবিশন’ ছোটোগল্পের সংকলন থেকে নেওয়া হয়েছে। যে, পরবর্তীকালে নারায়ণবাবুর স্ত্রী ও পুত্র—আশাদেবী ও অরিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সম্পাদিত রচনা সমগ্র-তেও ‘দাম’ গল্পটি স্থান পেয়েছে।

    বিষয় অল্প কথায়:    
  • ‘দাম’ গল্পটির সূচনা গল্পের কথক সুকুমারবাবুর ছেলেবেলার অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের শাসন-পীড়নমূলক অঙ্ক শেখানোর কথা দিয়ে। এমনিতে অঙ্কের মাস্টার মশাইয়ের - অঙ্ক বিষয়ের ওপর দক্ষতা অনেকটা জাদুকরের মতো। যেসব অঙ্ক নিয়ে ছাত্ররা ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটিয়ে দিত, তিনি একবারমাত্র তাকিয়ে দেখেই ঝড়ের গতিতে সেই অঙ্ক কিছুক্ষণের মধ্যেই বোর্ডের ওপর সাজিয়ে দিতেন।
  • মাস্টারমশাইয়ের অঙ্ক কষানোর অন্য দিকটি ছিল ভয়ংকর। কোনো ছাত্র অঙ্ক না-পারলে তিনি তাকে তাঁর প্রকাণ্ড হাতের প্রচণ্ড চড় কষাতেন। শুধু তাই নয়, কারো চোখে বিন্দুমাত্র জল দেখলেই তিনি তার পৌরুষ নিয়ে খোঁটা দিতেন।  এই কারণে তিনি ছাত্রদের কাছে বিভীষিকা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। 
  • সুকুমারবাবুর কথায় ম্যাট্রিকুলেশনের আগে পর্যন্ত তাদের এই যন্ত্রণা সহ্য করতে হয়েছিল। ছাত্রদের অঙ্কে উৎসাহ দেওয়ার জন্যে মাস্টারমশাই প্লেটো ও স্বর্গের দরজাতে যে কেবলমাত্র অঙ্ক জানা লোকেদের প্রবেশের অধিকারের কথা লেখা ছিল—এ কথা বারবার উল্লেখ করতেন।
  • পরিণত বয়সে একটি পত্রিকার ফরমাশে বাংলার অধ্যাপক সুকুমারবাবু অঙ্কের মাস্টারমশাইকে নিয়ে একটি কল্পনার খাদ মেশানো গল্প লেখেন। সেখানে তিনি অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের পীড়নমূলক অঙ্ক শেখানোর পদ্ধতির বিরুদ্ধে শ্লেষ ও কটাক্ষ করে তাঁকে নস্যাৎ করার চেষ্টা করেন। সেই গল্পটি লেখার জন্যে সুকুমারবাবু পত্রিকার পক্ষ থেকে দশ টাকা দক্ষিণা বা ‘দাম’ পেয়েছিলেন।
  • বাংলাদেশের কলেজের আহ্বানে বক্তৃতা দিতে গিয়ে আবার সেই পুরোনো অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের সঙ্গে সুকুমারবাবুর সাক্ষাৎ হয়। জ্বালাময়ী বক্তৃতার দৌলতে তখন সুকুমারবাবু প্রশংসা ও আত্মশ্লাঘার আনন্দসাগরে অবগাহন করছিলেন। মাস্টার মশাইয়ের পুরোনো কণ্ঠস্বরে তাঁর সম্বিৎ ফেরে। পুরোনো ছাত্রের জন্যে যে-গর্ব, স্নেহ-মমতা ও ক্ষমার মহাসাগর নিয়ে তিনি সুকুমারবাবুর কাছে উপস্থিত হলেন –তাতে অপরিসীম লজ্জা ও আত্মগ্লানিতে ভরে উঠল সুকুমারবাবুর হৃদয়। 
  • গল্পের একেবারে শেষ পর্বে এসে গল্পের প্রধান চরিত্র সুকুমারবাবুর এই উপলব্ধিই হয় যে, কিছু কিছু এমন অনুভূতি বা বোধ আছে, যা অমূল্য। কোনো বস্তুগত ‘দাম’ দিয়ে তাকে বেচা-কেনা যায় না, তার মূল্যায়নও করা যায় না। তাঁর প্রতি মাস্টারমশাইয়ের স্নেহ-মমতা ক্ষমা এমনকি শাসনও অমূল্য—সব ঐশ্বর্যের চেয়েও সেরা।

    নামকরণের খুঁটিনাটি :    
  • ‘দাম’ গল্পটির সূচনা হয়েছে গল্পের কথক সুকুমারবাবুর ছেলেবেলার অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের শাসন-পীড়নমূলক পদ্ধতিতে অঙ্ক শেখানোর কথা দিয়ে। 
  • ‘দাম’ গল্পটির সূচনা হয়েছে গল্পের কথক সুকুমারবাবুর ছেলেবেলার অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের শাসন-পীড়নমূলক পদ্ধতিতে অঙ্ক শেখানোর কথা দিয়ে। 
  • অনেকদিন পরে, বাংলাদেশের এক প্রান্তের একটি কলেজে বক্তৃতা দিতে গিয়ে আবার সেই পুরোনো অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের সঙ্গে সুকুমারবাবুর সাক্ষাৎ হল। পুরোনো কৃতী ছাত্রের জন্যে যে-গর্ব, স্নেহ-মায়া-মমতা ও ক্ষমার মহাসাগর হয়ে তিনি তাঁর কাছে উপস্থিত হলেন তাতে অপরিসীম লজ্জা ও আত্মমানিতে ভরে উঠল সুকুমারবাবুর হৃদয়। 
  • এতদিন পরে তাঁর স্পষ্ট উপলখি হল, “আমি তাঁকে দশ টাকায় বিক্রি করেছিলুম। এ অপরাধ আমি বইব কী করে, এ লজ্জা আমি কোথায় রাখব !”
  • গল্পের শেষ পর্বে এসে অদ্ভুত বৈপরীত্যময় একটি মোচড়ে লেখক যেন পাঠক-হৃদয়কে মথিত করে দেন। পৃথিবীতে এমন কিছু কিছু বোধ ও অনুভূতি আছে যা অমূল্য, কোনো বস্তুগত 'দাম' দিয়ে তাকে বেচা-কেনা যায় না। 

    রসবিচার :   
            গল্পের শেষ পর্বে এসে অদ্ভুত বৈপরীত্যময় একটি মোচড়ে লেখক যেন পাঠক-হৃদয়কে মথিত করে দেন। পৃথিবীতে এমন কিছু কিছু বোধ ও অনুভূতি আছে যা অমূল্য, কোনো বস্তুগত ‘দাম’ দিয়ে তাকে বেচা-কেনা যায় না। এই গল্পের প্রধান চরিত্র তথা কথক সুকুমারবাবু সেই ভুলটিই করে বসেছিলেন। আর সেখানেই গল্পের ব্যঞ্জনা। 'দাম' গল্পটি তাই পাঠকের কাছে ব্যঞ্জনা নিয়ে হাজির হয়। সুতরাং, ব্যঞ্জনাধর্মী রীতিতে গল্পটির নামকরণ সার্থক ও সুপ্রযুক্ত।

     নির্বাচিত প্রশ্নোত্তর :    
১) “স্কুলে কী বিভীষিকাই যে ছিলেন ভদ্রলোক।” –কার কথা এখানে বলা হয়েছে ? তাঁকে বিভীষিকা বলার কারণ কী ?
 এখানে ‘দাম’ গল্পের কথক, বাংলার অধ্যাপক সুকুমারবাবুর ছেলেবেলার অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের কথা বলা হয়েছে।
বিভীষিকা বলার কারণ :
         অঙ্কের ব্যাপারে মাস্টারমশাই ছিলেন অত্যন্ত কঠোর প্রকৃতির। ছাত্রদের জটিল অঙ্ক যেমন তিনি অনায়াসে ছবির মতো বোর্ডে সাজিয়ে দিতেন, তেমনই অঙ্ক না-পারলে তাঁর হাতের প্রচণ্ড চড় খেয়ে তাদের মাথা ঘুরে যেত। কাঁদলে জুটত পৌরুষের খোঁটা আর পুকুরের জলে ফেলে দেওয়ার হুমকি। তাই ছাত্রদের কাছে তিনি ছিলেন প্রকৃত অর্থেই বিভীষিকা।

২) “মুখস্থ বললেও ঠিক হয় না।”–কোন্ প্রসঙ্গে, কে কথাটি বলেছে ? তার এই মন্তব্যের কারণ কী?
 নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের লেখা ‘দাম’ গল্পের এই উক্তিটি স্কুলের অঙ্কের শিক্ষকের অঙ্ক বিষয়ের ওপর অসামান্য পারদর্শিতা ও দক্ষতার পরিচয় প্রসঙ্গে গল্পের কথক সুকুমারবাবু বলেছেন।
মন্তব্যের কারণ :
         স্কুলের অঙ্কের শিক্ষক তাঁর অসমান্য পারদর্শিতায় মুহূর্তের মধ্যে ছাত্রদের না-পারা অঙ্ক ব্ল্যাকবোর্ডে করে দিতেন। তাঁর সেই দক্ষতাকে মুখস্থ বললে বিষয়টিকে খাটো করে দেখা হবে বলে তাঁর মনে হয়। বরং তাঁর মনে হয় বোর্ডে, যেন অদৃশ্য অক্ষরে অঙ্ক করা আছে, আর তিনি কেবল খড়ি বুলিয়ে চলেছেন। মাস্টারমশায়ের অঙ্কের ওপর এই দক্ষতা ও তার প্রয়োগ তাকে বিমোহিত করত বলেই সুকুমারবাবু কথাটি বলেছেন।

৩) “ওঁর ভয়ে তারাই তটস্থ হয়ে থাকত।” – কার ভয়ে, কারা তটস্থ থাকত ? কেন তটস্থ থাকত ?
 নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের 'দাম' গল্পের এই উক্তি অনুসারে স্কুলের অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের ভয়ে অঙ্কে একশোয় একশো পাওয়া সব ছাত্ররা ভয়ে তটস্থ থাকত।
তটস্থ থাকার কারণ :
          মাস্টারমশাই ছাত্রদের কাছে ছিলেন বিভীষিকার মতো। তাঁর হাতের প্রকাণ্ড চড়ে মাথা ঘুরে যেত অথচ কেউ কাঁদতে পারবে না। কারো চোখে জল দেখলেই তিনি হুংকার দিয়ে বলে উঠতেন "পুরুষ মানুষ হয়ে অঙ্ক পারিসনে; তার ওপর কাঁদতে লজ্জা করে না!” মোট কথা, অঙ্ক না পারা বিষয়ে কোনো ছাত্রকে রেয়াত করতেন না বলেই অঙ্কে ভালো ছাত্ররা পর্যন্ত তাঁর ভয়ে তটস্থ থাকত।

৪) “তাদের অবস্থা সহজেই কল্পনা করা যেতে পারে।" কাদের সম্পর্কে বলা হয়েছে ? তাদের অবস্থা কী হতে পারে বলে তুমি মনে করো ?
 নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের 'দাম' গল্পের এই উক্কিটি অঙ্ক বিষয়ে টেনে টুনে কুড়ি নম্বর পাওয়া কিংবা তাও না-পাওয়া ছাত্রদের সম্পর্কে বলা হয়েছে।
অবস্থার বিবরণ :
        অঙ্কে দুর্বল ছাত্ররা মাস্টারমশাইয়ের চড় সহ্য করেও কাঁদতে পারত না। পৌরুষের খোঁটা শুনতে হত। চড় খেয়ে মাথা ঘুরলেও কাঁদবার জো ছিল না। অঙ্ক না-পারা ভীষণ অগৌরবের তা বোঝাতে তিনি প্লেটোর উদাহরণ, স্বর্গের দরজায় লিখে রাখা বিষয়ের উল্লেখ করতেন। অর্থাৎ, অঙ্ক জানা সর্বত্র বাধ্যতামূলক। সুতরাং তাদের অবস্থা যে অতীব সািন এবং ভয়ংকর হত, তা বলাই বাহুল্য।

৫) “পুরুষ মানুষ হয়ে অথঙ্ক পারিসনে তার ওপরে কাঁদতে লজ্জা করে না ? – কে, কাকে বলতেন ? বক্তার মনোভাব স্পষ্ট করো।
 নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের 'দাম' গল্পের অঙ্কের মাস্টারমশাই তাঁর হাতের চড় খেয়ে চোখের জল ফেলতে থাকা অঙ্ক না-পারা ছেলেদের প্রশ্নোক্ত কথাটি বলতেন।
বক্তার মনোভাব :
         উক্ত কথার মাধ্যমে বক্কার অঙ্কের প্রতি প্রগাঢ় অনুরাগের মনোভাব ফুটে ওঠে। সেইসঙ্গে তিনি চাইতেন, তাঁর ছাত্রদের মধ্যে সেই আগ্রহ ও দক্ষতা প্রকাশ পাক। তিনি মনে করতেন—পৌরুষ মানেই অঙ্কে অনায়াস দখল। তাই উক্তিটি বক্তার ব্যক্তিত্ব ও পৌরুষের উদাহরণ স্বরূপ হয়ে ওঠে।

৬) “এমন অঘটন কল্পনাও করতে পারতেন না মাস্টারমশাই।”—উক্তিটির তাৎপর্য লেখো।
তাৎপর্য :
        নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘দাম’ গল্পের অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের কাছে অঙ্ক-পারা ও পৌরুষ সমার্থক। পুরুষমানুষ অথচ অঙ্ক পারে না-এ তাঁর অসহ্য ছিল। অতুলনীয় জ্ঞান ও দক্ষতাসম্পন্ন মাস্টারমশাইয়ের ভাবনায় ছিল— প্রতিটি ছাত্রকে অঙ্ক ভালোভাবে জানতে হবে। তাদের অনুপ্রাণিত করতে তিনি দার্শনিক প্লেটোর উদাহরণ টানতেন। স্বর্গে যাওয়ার জন্যেও যে অঙ্ক জানা আবশ্যক, তাও উল্লেখ করতেন তিনি।

৭) “যে অঙ্ক জানে না এখানে তার প্রবেশ নিষেধ।”— কথাটি কোথায় লেখা থাকত ? বস্তা এ কথা - বলতেন কেন ?
 নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের 'দাম' গল্পের মাস্টারমশাইয়ের বলা এই কথাটি প্লেটোর দোরগোড়ায় লেখা থাকত ৷
এ কথা বলার কারণ :
        মাস্টারমশাই-এর কাছে অঙ্ক-পারা ও পৌরুষ সমার্থক। পুরুমানুষ হলে অঙ্ক পারতেই হবে, এই ছিল তাঁর ভাবনা। তিনি মনে করতেন, অঙ্ক করতে না পারা পুরুষোচিত নয় এবং তা নরকযন্ত্রণা ভোগ করার সমান। আসলে মাস্টারমশাই ছাত্রদের মনে অঙ্কের প্রতি অনুরাগ সঞ্চার করতে, তাদের অনুপ্রাণিত করতে দার্শনিক প্লেটোর উদাহরণ দিতেন।

৮) “স্বর্গের দরজাতেও ঠিক ওই কথাই লেখা রয়েছে—" কী লেখা আছে ? এ প্রসঙ্গে বক্তা আর কী বলেছেন ?
 স্বর্গের দরজায় লিখে রাখা কথাটি হল—“যে অঙ্ক জানে না এখানে তার প্রবেশ নিষেধ।
প্রসঙ্গ অনুযায়ী কথা :
        অঙ্ক বিষয়ে সুকুমারবাবুদের মনের মধ্যে তীব্র আতঙ্ক ছিল। তার ওপর মাস্টারমশাইয়ের কথা অনুযায়ী স্বর্গের দরজাতেও নাকি দার্শনিক, অঙ্কবিদ প্লেটোর দরজার মতোই ‘যে অঙ্ক জানে না এখানে তার প্রবেশ নিষেধ' লেখা আছে। তাই অঙ্ক আতঙ্কে ভোগা সুকুমারবাবু মজা করে বলেছেন—যে স্বর্গে পা দিয়েই জ্যামিতির এক্সট্রা কষতে হবে, কিংবা স্কোয়ার মেজারের অঙ্ক নিয়ে বসতে হবে, সে-স্বর্গের চাইতে লক্ষ যোজন দূরে থাকাটাই নিরাপদ।

৯) “আমরা নিরাপদ বোধ করতুম।” – “আমরা’ কারা? তারা কীসে ‘নিরাপদ’ বোধ করত ?
 নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘দাম’ গল্প থেকে নেওয়া প্রশ্নোক্ত উদ্ধৃতির ‘আমরা’ হল— স্কুলের অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের ক্লাসে অঙ্কে টেনেটুনে কুড়ি নম্বর তুলতে না পারা সুকুমারবাবু সহ অন্যান্য ছাত্ররা।
নিরাপরাধ বোধ :
         মাস্টারমশাই ছাত্রদের অঙ্কে আগ্রহী করতে চাইতেন। তা সত্ত্বেও সুকুমারবাবু স্কুলে অঙ্ক শিখতে পারেননি। এমনকি প্লেটো কে কিংবা তার দরজা দিয়ে ঢুকতে না পারলে কী ক্ষতি হবে তা নিয়েও অহেতুক মাথা ঘামাননি। এ ছাড়া তিনি ভাবতেন—যে স্বর্গে পা দিয়ে জ্যামিতির এক্সট্রা করতে হবে কিংবা স্কোয়ার মেজারের অঙ্ক নিয়ে বসতে হবে সেখান 1 থেকে লক্ষ যোজন দূরে থাকাই নিরাপদ।

১০) “সেই বিভীষিকা মন থেকে গেল না।”—বক্তার ধারণা অনুযায়ী বিভীষিকার স্বরূপ উল্লেখ করো।
বিভীষিকার স্বরূপ :
            নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের 'দাম' গল্পের অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের বিশ্বাস-পুরুষমাত্রই অঙ্কে পারদর্শী হবে। তার জন্যে ছাত্রদের তিনি কঠোর শাসন করতেন। আঘাত করতে দ্বিধা করতেন না। কিন্তু হিতে বিপরীত হল। সুকুমারবাবুর অঙ্ক শেখা হয়নি। কিন্তু দুঃস্বপ্ন পিছু ছাড়েনি। এম এ পাস করার পরেও স্বপ্ন দেখেছেন—পরীক্ষার লাস্ট বেল পড়তে চলেছে, কিন্তু অঙ্ক মিলছে না। মাস্টারমশাই গার্ড হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। দু-চোখে তাঁর আগুন ঝরছে। দাঁতে দাঁত ঘষে কিছু বলছেন। বিভীষিকার এই ভয়ংকরতা সারাজীবনের জন্য কথকের মনে প্রভাব ফেলেছে।

১১) “এম-এ পাশ করবার পরেও স্বপ্ন দেখেছি,”– কে স্বপ্ন দেখেছেন ? স্বপ্নের বিষয়বস্তুই বা কী? 
 এম এ পাস করার পরেও অঙ্ক নিয়ে দুঃস্বপ্ন দেখেছেন ‘দাম’ গল্পের কথক সুকুমারবাবু।
স্বপ্নের বিষয়বস্তু :
            স্বপ্নের বিষয়বস্তু ছিল অঙ্কের পরীক্ষা। আসলে এম এ পাস করেও সুকুমারবাবুর মন থেকে অঙ্কের বিভীষিকা মুছে যায়নি। স্বপ্নে তিনি দেখেছেন পরীক্ষার লাস্ট বেল পড়তে চলেছে, অথচ তাঁর একটি অঙ্কও মিলছে না। আর অঙ্কের মাস্টারমশাই গার্ড হয়ে তাঁর একেবারে সামনে এসে দাঁড়িয়েছেন। তাঁর দু-চোখ দিয়ে আগুন ঝরছে। দাঁতে দাঁত ঘসে তিনি কিছু বলছেন।

১২) “একদিন একটি পত্রিকার পক্ষ থেকে ফরমাশ এল”—কী বিষয়ে ফরমাশ এল সুকুমারবাবুর কাছে ? তিনি কী বিষয়ে লিখলেন সেই পত্রিকায় ?
 সুকুমারবাবুর কাছে একটি পত্রিকার পক্ষ থেকে ফরমাশ এল নিজের ছেলেবেলার গল্প শোনানোর জন্যে।
লিখিত বিষয় :
             সুকুমারবাবু সেই পত্রিকায় তাঁর ছেলেবেলার অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের বিষয়ে লিখলেন। তবে তাঁকে নিয়ে লিখতে গিয়ে তিনি বেশ কিছু কল্পনার খাদ ও তির্যক কটাক্ষ মিশিয়ে নিলেন। তা ছাড়া, প্রহার করে মাস্টারমশাই যেভাবে সকলকে অঙ্ক-বিশারদ করে তোলার অসাধ্য চেষ্টা করেছিলেন, তা সফল হওয়া যে আদৌ সম্ভব ছিল না, সে বিষয়েও মতামত ব্যক্ত করলেন সেই পত্রিকায় লেখার মধ্যে।

১৩) “ওটা প্রীতির ব্যাপার, পদমর্যাদার নয়।”—‘ওটা’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে ? ‘ওটা’-কে বক্তার প্রীতির ব্যাপার মনে হয়েছে কেন ?
 নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের 'দাম' গল্পের এই উদ্ধৃতিতে ‘ওটা’ বলতে একটি পত্রিকার পক্ষ থেকে ছেলেবেলার কথা নিয়ে গল্প লেখার বিষয়কে বোঝানো হয়েছে।
মনে হওয়ার কারণ :
             সুকুমারবাবু পত্রিকায় লেখার যুক্তি হিসেবে ভরসা পান এই ভেবে যে, পত্রিকার পাঠকসংখ্যা যেহেতু সীমিত এবং তার ওপর বিখ্যাত লেখকদের কেউ সেই তালিকায় =র নেই, সেহেতু নির্দ্বিধায় তিনি লিখতে পারেন। আর এতে আভিজাত্যের ব্যাপার থাকে না থাকে ভালোবাসার বিষয়। এ কারণে বক্তার 'ওটা'-কে প্রীতির ব্যাপার মনে হয়েছে।

১৪) “ছবিটি যা ফুটল তা উজ্জ্বল নয়।”—কোন্ প্রসঙ্গে কেন কথাটি বলা হয়েছে ?
 নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের 'দাম' গল্পের এই উদ্ধৃতি অনুযায়ী সুকুমারবাবুর লেখা গল্পে স্কুলের অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের চরিত্র-চিত্রণের কথা বলা হয়েছে।
 একথা বলার কারণ :
        অখ্যাত এক পত্রিকার অনুরোধে ছেলেবেলার কথা জানিয়ে কথক একটি গল্প লেখেন। গল্পের মধ্যে তিনি স্কুলের বিভীষিকা স্বরূপ অঙ্কের মাস্টারমশাইকে তুলে ধরেন। মাস্টারমশাইয়ের সমালোচনা করে তিনি কল্পনার খাদ মিশিয়ে যে গল্পটি লিখলেন, সেই প্রসঙ্গেই কথাটি বলা হয়েছে। সেখানে মাস্টারমশাইয়ের চরিত্রটির সঠিক বিচার হয়নি।

১৫)  “ওঁদের বার্ষিক উৎসব...বক্তৃতা দিতে হবে।” –কাদের বার্ষিক উৎসব? সেখানে বস্তা কী বিষয়ে, কেমন বক্তৃতা দিলেন ?
 বাংলাদেশের এক প্রান্তের একটি কলেজের বার্ষিক উৎসবের কথা এখানে বলা হয়েছে।
বক্তৃতার স্বরূপ :
         কলেজটির বার্ষিক উৎসবে সুকুমারবাবু খুব জাঁক করে বক্তৃতা করলেন। তাতে তিনি রবীন্দ্রনাথ থেকে বারোটি উদ্ধৃতি দিলেন, অন্য কারও একটি ইংরেজি কোটেশন চালিয়ে দিলেন বার্নার্ড শ্য-এর নামে, শেষে দেশের তরুণদের নিদারুণভাবে জাগ্রত হতে বলে টেবিলে একটি প্রকাণ্ড কিল মেরে প্রচণ্ড হাততালির মধ্যে তিনি বক্তৃতা শেষ করলেন। বক্তৃতা শুনে সকলে তাঁর উচ্চ প্রশংসা করতে লাগল।

১৬) “আজ শরীরটা তেমন ভালো নেই, –কার শরীরটা তেমন ভালো নেই ? কী উপলক্ষ্যে তিনি এ কথা বলেছিলেন ?
  ‘দাম’ গল্পের কথক সুকুমারবাবুর মনে হয়েছে যে, তাঁর শরীরটা তেমন ভালো নেই।
একথা বলার কারণ :
         বৃদ্ধ প্রিন্সিপ্যাল যখন নিজের মুখে তাঁর বক্তৃতায় মুগ্ধ হয়ে প্রশংসা করছিলেন, তখন কৃতিত্ব জাহির করার জন্যে সুকুমারবাবু বিনয়ের ভঙ্গিমায় এ কথা বলেছিলেন। আসলে সমবেত গুণমুগ্ধদের কাছে তাঁর বক্তৃতার ক্ষমতা যে আরও কত প্রবল ও মহিমান্বিত, তা শুনিয়ে দেওয়ার আত্ম শ্লাঘা বা অহংকার থেকেই একথা বলা হয়েছে। এ কথা শুনে স্বাভাবিকভাবেই পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ছেলেদের চোেখ বিস্ময়ে কপালে উঠে গেল।

১৭)  “এক বুড়ো ভদ্রলোক আমার সঙ্গে দেখা করতে চান।”–বুড়ো ভদ্রলোকটি কে? তাঁকে দেখে সুকুমারবাবুর কী প্রতিক্রিয়া হল ?
 বুড়ো ভদ্রলোকটি হলেন গল্পের কথক সুকুমারবাবুর ছাত্রাবস্থার অঙ্কের মাস্টারমশাই। 
প্রতিক্রিয়া  :
         তাঁকে দেখে প্রথমে সুকুমারবাবুর মনে পুরোনো। ভয়ের অনুভূতি জেগে উঠল। বিশেষ করে তাঁর গলার স্বরে যেন। রক্ত হিম করা ছেলেবেলার স্মৃতি ফিরে এল। মনে পড়ল পিঠের ওপর সেই ভয়ংকর চড় আর প্রচণ্ড হুংকার! কিন্তু পরমুহূর্তেই অপরিসীম অন্যায় তার মাথা মাস্টারমশাইয়ের পায়ে নেমে এল।' অর্থাৎ, সুকুমারবাবু প্রণাম করলেন মাস্টারমশাইকে।

১৮) “আমার মাথা তখনই ওঁর পায়ে নেমে এল।” এখানে কার মাথা আর কার পায়ের কথা বলা হয়েছে ? বক্তার মাথা উক্ত ব্যক্তির পায়ে নেমে এল কেন ? 
 এখানে পুরোনো ছাত্র সুকুমারবাবুর মাথা শ্রদ্ধায় বৃদ্ধ = অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের পায়ে নেমে এল।
মাথা নত হওয়ার কারণ :
            অতীতে অঙ্ক আর অঙ্কের মাস্টারমশাই সুকুমারবাবুদের কাছে ছিলেন বিভীষিকা। তাঁর শাসন ও পীড়ন তাঁদের কাছে অত্যাচার বলে মনে হত। কিন্তু বহু বছর পরে যখন সুকুমারবাবু সেই পুরোনো মাস্টারমশাইয়ের স্নেহ সম্বোধন শুনলেন, তখন প্রাথমিকভাবে ভয়ের অনুভূতি হলেও = গভীর শ্রদ্ধাবোধ এবং বটবৃক্ষের মতো কোনো অভিভাবকের ছত্রছায়ায় থাকার অনুভূতিতে তাঁর মাথা মাস্টারমশাইয়ের পায়ে নেমে এল।

১৯) "অপরাধীদের মতো চাইলুম,”–কে, কার উদ্দেশে অপরাধীর মতো চাইলেন ? এরকমভাবে চাইবার কারণ কী?
 অনেক বছর আগের ছাত্র সুকুমারবাবু তাঁর পুরোনো অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের দিকে অপরাধীর মতো চাইলেন।
চাইবার কারণ :
            আসলে ছাত্রাবস্থায় তিনি অঙ্কের মাস্টারমশাইকে শ্রদ্ধার বদলে আতঙ্কের দৃষ্টিতেই দেখেছেন। পরিণত বয়সেও তিনি একটি পত্রিকায় মাস্টারমশাইয়ের গল্প লিখতে গিয়ে তাঁর শাসন-পীড়নের মাধ্যমে অঙ্ক শেখানোর পদ্ধতির বিরুদ্ধে অনেক শ্লেষ ও কটাক্ষ করেছিলেন। বৃদ্ধ বয়সে সেই মাস্টারমশাই তার অন্তঃসারশূন্য বক্তৃতায় মুগ্ধ হয়েছেন শুনে ভেতরে ভেতরে সুকুমারবাবু ভীষণ লজ্জা পেলেন। তাই তিনি তাঁর প্রশংসা শুনে তাঁর দিকে অপরাধীর মতো চাইলেন।

২০) “আমার ছাত্র আমাকে অমর করে দিয়েছে।”-কে, কাকে, কীভাবে অমর করে দিয়েছে 'দাম' গল্পটি অবলম্বনে লেখো।
অমরত্বের বিবরণ :
        'দাম' গল্পটিতে কথক সুকুমারবাবু তাঁর পুরোনো। অঙ্কের মাস্টারমশাইকে নিয়ে একটি পত্রিকায় একটি গল্প লিখেছিলেন। সৌভাগ্যক্রমে সেই গল্পটি বৃদ্ধ মাস্টারমশাই পড়েছিলেন। তাঁর ছাত্র তাঁকে মনে রেখেছে, তাঁকে নিয়ে গল্প লিখেছে ভেবে তাঁর চোখ আনন্দাশ্রুতে ভরে ওঠে। লেখাটিকে তিনি সবসময় নিজের পকেটে রাখেন, সকলকে দেখান এবং গর্বের সঙ্গে নিজের ছাত্রের কৃতিত্বের কথা গল্প করেন। তাঁর মনে হয়, এই গল্পটির মাধ্যমে তাঁর ছাত্র তাঁকে অমর করে দিয়েছেন।

২১) “কৃত শ্রদ্ধা নিয়ে লিখেছে। ” - কী লেখার কথা এখানে বলা হয়েছে? সত্যিই কি শুধুমাত্র শ্রদ্ধা নিয়ে লেখাটি লিখেছিলেন সুকুমারবাবু ?
 একটি পত্রিকার ফরমাশমতো সুকুমারবাবু তাঁর ছাত্রাবস্থার অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের বিষয়ে একটি গল্প লেখেন। এখানে সেই গল্পটির কথা বলা হয়েছে।
লেখার ধরন :
            গল্পটি মাস্টারমশাইকে নিয়ে লেখা হলেও তাতে সুকুমারবাবু কিছু কল্পনার খাদ ও তির্যক কটাক্ষ মিশিয়ে দিয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের শাসন-পীড়নের মাধ্যমে অঙ্ক শিখতে বাধ্য করার পদ্ধতিটি যে সঠিক ছিল না সে বিষয়েও বেশ কিছু সদুপদেশ ছিল গল্পটিতে। বলাইবাহুল্য যে, পূর্ণ শ্রদ্ধার মনোভাব নিয়ে গল্পটি লেখা হয়নি।

২২) “আর বলতে পারলেন না” কে আর বলতে পারলেন না? তাঁর বলতে না পারার কারণ কী? 
 'দাম' গল্পের কথক সুকুমারবাবুর ছেলেবেলার অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের কথা এখানে বলা হয়েছে।
বলতে না পারার কারণ :
        পরিণত বয়সে সুকুমারবাবু পুরোনো অঙ্কের মাস্টারমশাইকে নিয়ে একটি তির্যক শ্লেষ বিদ্রুপ মেশানো গল্প লিখেছিলেন। সেই গল্পটি বৃদ্ধ মাস্টারমশাই পড়েছিলেন। মাস্টারমশাই আপ্লুত হয়ে যান তাঁর পুরোনো ছাত্রের শ্রদ্ধাবোধের ধারণায়। তাঁর ছাত্র এখন নামকরা লেখক-অধ্যাপক এবং অসাধারণ বাগ্মী হয়ে উঠেছে—এই গর্ববোধের কথা সুকুমারবাবুকে বলতে গিয়ে আনন্দে, আবেগে তাঁর গলা ধরে আসে। তিনি আর বলতে পারে না।

২৩) “এ অপরাধ আমি সইব কী করে।” –বক্তার এই অনুভূতির কারণ ব্যাখ্যা করো।
অনুভূতির কারণ ব্যাখ্যা :
            ছেলেবেলার কথা জানিয়ে অঙ্কের মাস্টারমশাইয়ের বিভীষিকাময় আচরণকে ভিত্তি করে এবং তাঁর শিক্ষাপ্রণালীকে ব্যঙ্গ করে সুকুমারবাবু অখ্যাত একটি পত্রিকায় যে-গল্প লেখেন, তা ঘটনাক্রমে মাস্টারমশাইয়ের হাতে পড়ে। সুকুমারবাবুকে পেয়ে মাস্টারমশাই তাঁকে তাঁর গল্পের বিষয় জানান এবং গল্পের প্রশংসা করেন। ছেলেদের ওপর তাঁর কোনো রাগ নেই। প্রাক্তন শিক্ষকের এই বিবর্তনে সুকুমারবাবু উপলব্ধি করেন—এই শিক্ষকের স্বরূপ তিনি বুঝতে পারেননি। না জেনেই গল্পে তাঁকে কালিমালিপ্ত করে দশ টাকা উপার্জনও করেছেন। মাস্টারমশাইয়ের প্রকৃত স্বরূপ বুঝতে পেরে  সুকুমারবাবু তাঁর পূর্বের আচরণকে অসহনীয় অপরাধ বলে  মনে করেছেন।

২৪) “এ লজ্জা আমি কোথায় রাখব।” -কার কথা এখানে বলা হয়েছে? বক্তার এই লজ্জার কারণ বিশ্লেষণ করো।
 এখানে পরিণত বয়সের সুকুমারবাবুর লজ্জার কথা বলা হয়েছে।
লজ্জার বিবরণ :
         পরিণত বয়সে মাস্টারমশাইকে নিয়ে গল্প লিখতে গিয়ে সুকুমারবাবু তাতে তাঁর শাসন ও পীড়নমূলক শেখানোর পদ্ধতি নিয়ে প্রচ্ছন্ন শ্লেষ ও কটাক্ষ করেন। কিন্তু অনেকদিন পরে সেই বৃদ্ধ মাস্টারমশাইয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ হওয়ার পর = সুকুমারবাবু বুঝতে পারলেন যে, তিনি সে-কাজের জন্যে তাঁকে #1 ক্ষমাই করেননি, বরং সুকুমারবাবুর প্রতি তাঁর স্নেহ-মমতা ও গর্ববোধে তিনি আপ্লুত নিজের কৃতকর্মের জন্যে তাই তিনি লজ্জা পেলেন কারণ তিনি দশ টাকার বিনিময়ে স্নেহ-মমতা ক্ষমার এমন মহাসমুদ্র মাস্টারমশাইকে বিক্রি করেছিলেন।

3 comments

  1. ix এর ( সাহিত্য সঞ্চয়ন ) কবিতা গুলি আপলোড করুন , please .....

    ReplyDelete
  2. সুন্দর!!!আলোচনা।।।

    ReplyDelete
  3. শব্দার্থ গুলি আপলোড করুন

    ReplyDelete