Page Nav

HIDE

Classic Header

{fbt_classic_header}

NEW :

latest

প্রাচীন ও মধ্যযুগ থেকে নির্বাচিত 20টি 2 নম্বর মানের প্রশ্নোত্তর (set - 05) :

         : প্রাচীন ও মধ্যযুগ থেকে নির্বাচিত 20টি 2 নম্বর মানের প্রশ্নোত্তর :          : প্রশ্নের বিষয় :  চর্যাপদ,  শ্রীকৃষ্ণকীর্তন,  চন্ডিদা...


        : প্রাচীন ও মধ্যযুগ থেকে নির্বাচিত 20টি 2 নম্বর মানের প্রশ্নোত্তর :        
: প্রশ্নের বিষয় : 
চর্যাপদ,  শ্রীকৃষ্ণকীর্তন,  চন্ডিদাস,  বিদ্যাপতি,  জ্ঞানদাস,  গোবিন্দদাস,  মুকুন্দ চক্রবর্তী,  ভারতচন্দ্র রায়,  বিজয় গুপ্ত, কেতকাদাস ক্ষেমানন্দ, ঘনরাম চক্রবর্তী,  কৃত্তিবাস ওঝা,  মালাধর বসু,  কাশীরাম দাস, বৃন্দবন দাস,  কৃষ্ণদাস কবিরাজ, সৈয়দ আলাওল,  দৈৗলত কাজি,  রামপ্রসাদ সেন ও কমলাকান্ত ভট্টাচার্য ।
                                                                                                                                                                                               

১) বাংলা সাহিত্যের আদি নিদর্শনের নাম কি ? এটি কোন সময়ে রচিত ? এর সাহিত্যমূল্য নিরুপণ করো ।
⬐ বাংলা সাহিত্যের আদি নিদর্শন – ‘চর্যাপদ’ ।
⬐  চর্যাপদের রচনাকাল বিকর্কিত । তবে ভাষাচার্য সুনীতি কুমার চট্টোপাধ্যায়-এর মতে ১০ম–১২শ শতকের মধ্যে চর্যাপদ রচিত হয়।
⬐ সাহিত্য মূল্য :
        চর্যাপদ বাংলা ভাষায় প্রথম গীতিকবিতা, কোনো কোনো পদে রূপক ও চিত্রকল্পের প্রয়োগ আছে। গীতি কবিতার রসসৃষ্টিতে উজ্জ্বল হয়ে আছে এই খণ্ড কবিতাগুলি। ভাষাগতদিক থেকেও এ গ্রন্থের গুরুত্ব অপরিসীম।

২) বাংলা সাহিত্যের প্রথম আখ্যান কাব্য কোনটি ? কাব্যটি আবিষ্কারের সঙ্গে সঙ্গে কোন্ আলোড়ন ওঠে? ওই আলোড়নের কারণ কী?
⬐ বাংলা সাহিত্যের প্রথম আখ্যান কাব্য – ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ ।
⬐ শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্য আবিষ্কারের সঙ্গে সঙ্গে চণ্ডীদাস সমস্যা দেখা দেয়।
⬐ আলোড়নের কারণ :
            আলোড়নের কারণ হলো শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যে একাধিক চণ্ডীদাসের ভনিতা যুক্ত পদ পাওয়া যায় । ফলে চন্ডিদাস সমস্যার উদ্ভব হয় ।

৩) ‘দুহুঁ কোড়ে দুহুঁ কাঁদে বিচ্ছেদ ভাবিয়া’ - পঙতিটি কার রচনা ? কোন পর্যায়ের পদ ? অতি সংক্ষেপে এই পঙতিটির সরলার্থ লিখুন ।
⬐ পঙতিটি রচনা করেছেন - চন্ডিদাস ।
⬐ পঙতিটি প্রেমবৈচিত্র্য পর্যায়ের ।
⬐ সরলার্থ :
        আলোচ্য পদটিতে রাধা ও কৃষ্ণ প্রেমের গভীরতার জন্য মিলন মুহূর্তেও বিচ্ছেদের কথা ভেবে আকুল হয়েছেন - এ্ই প্রেমবৈচিত্রের কথাই বলা হয়েছে ।

৪) কোন বৈষ্ণব কবিকে ‘অভিনব জয়দেব’ বলা হয় ? তাঁকে ওই নামে অভিহিত করার কারণ কি ? এই নাম কে দিয়েছিলেন ?
⬐ বিদ্যাপতিকে ‘অভিনব জয়দেব’ বলা হয় ।
⬐ অভিহিত করার কারণ :
            জয়দেবের রাধার আঙ্গিকে বিদ্যাপতির রাধা চিত্রিত হয়েছে । তাছাড়া বিদ্যাপতি জয়দেবকে অনসরণ করে তাঁর রাধা - কৃষ্ণ বিষায়ক পদ রচনা করেছেন । তাই বিদ্যাপতিকে ‘অভিনব জয়দেব’ বলা হয় ।
⬐ এই নাম দেন শিবসিংহ ।

৫) কাঁদড়া গ্রামের বিখ্যাত বৈষ্ণব কবির নাম কী ? তাঁর আবির্ভাব কাল কত ? তাঁর লিখিত একটি বৈষ্ণব পদ উল্লেখ করুন।
⬐ কাঁদড়া গ্রামের বিখ্যাত বৈষ্ণুব কবি হলেন—জ্ঞান দাস।
⬐ আনুমানিক ১৫৩০ খ্রিস্টাব্দে তাঁর জন্ম। অর্থাৎ তিনি চৈতন্য পরবর্তী যুগের কবি।
⬐ তাঁর ‘প্রেমবৈচিত্র্য’পর্যায়ের একটি পদ —
“সুখের লাগিয়া এঘর বাঁধিনু
অনলে পুড়িয়া গেল।”


৬) গৌরচন্দ্রিকা কাকে বলে? গৌরচন্দ্রিকা পদে শ্রেষ্ঠ কবি কে? এই পর্যায়ের একটি পদ লিখুন।
⬐ রাধা-কৃষ্ণ লীলা প্রবেশক পদই হচ্ছে গৌরচন্দ্রিকা।
⬐ এই পর্যায়ের শ্রেষ্ঠ কবি গোবিন্দদাস।
⬐ এই পর্যায়ের একটি উল্লেখ যোগ্য পদ হল –
‘‘চম্পক শোন কুসুম কনাকাচল।”

৭) মুকুন্দ চক্রবর্তীর কাব্যের নাম কী? কাব্যটিতে কটি কাহিনি আছে? কাহিনিগুলির নাম কী কী? প্রত্যেক কাহিনির দুটি করে চরিত্রের নাম লিখুন।
⬐ মুকুন্দ চক্রবর্তীর কাব্যের নাম—“অভয়ামঙ্গল।"
⬐ কাব্যটিতে দুটি কাহিনী রয়েছে।
⬐ কাহিনী বা খন্ড দুটির নাম -
ক. আখেটিক খণ্ড - কালকেতু ও ফুল্লরার কাহিনি।
খ. বণিক খণ্ড - ধনপতি ও লহনার কাহিনি।

৮) ভারতচন্দ্র রায়ের ‘অন্নদামঙ্গল কাব্যের’ চারটি প্রবাদ - প্রবচন লিখুন ।
⬐ ভারতচন্দ্র রায়ের ‘অন্নদামঙ্গল’ কাব্যের চারটি প্রবাদ - প্রবচন হল :
(i) ‘সে কহে বিস্তর মিছা, যে কহে বিস্তর’
(ii) ‘মন্ত্রের সাধন কিংবা শরীর পতন’
(iii) ‘মিছা কথা সিঁচাজল কতক্ষন রয়’
(iv) ‘নগর পুড়িলে দেবালয় কি এড়ায় ?’ ।


৯) বিজয় গুপ্ত কোন ধারার কবি ? তাঁর কাব্যের নাম কি ? চাঁদ সদাগর চরিত্র সৃষ্টিতে তাঁর কৃতিত্ব আলোচনা করো ।
⬐ বিজয় গুপ্ত মনসামঙ্গল ধারার কবি।
⬐ তাঁর কাব্যের নাম পদ্মপুরাণ”।
⬐ চরিত্র সৃষ্টিতে কৃতিত্ব :
            চাঁদ সদাগর চরিত্র মধ্যযুগের মঙ্গলকাব্যে এক অসামান্য দিক নির্ণয় করেছে। চাঁদ সদাগরের তেজস্বিতা ও বীর্যবত্তা বিজয় গুপ্ত সার্থক ভাবে তুলে ধরেছেন। চাঁদ চরিত্রাঙ্কনে বীররস ও পৌরুষকে সংহতির সঙ্গে কবি ফুটিয়ে তুলেছেন।

১০) কেতকাদাসের প্রকৃত নাম কী? এই নামকরণ করেন কী?
⬐ কেতকা দাসের প্রকৃত নাম - ক্ষেমানন্দ ৷
⬐ নামকরণের কারণ :
            মনসার জন্ম কেয়া পাতায়। তাই মনসার অপর নাম কেতকা। কবি মনসা অর্থাৎ কেতকার দাস। তাই কবি নিজেই এমন নাম নিয়েছেন।


১১) ঘনরাম চক্রবর্তীর লেখা কাব্যের নাম কী? কাব্যটি কবে রচিত হয় ? কাব্যটির দুটি বৈশিষ্ট্য লিখুন।
⬐ ঘনরাম চক্রবর্তীর কাব্য নাম-“শ্রীধর্মসংগীত”।
⬐ কাব্যটি আনুমানিক—1711 খ্রিষ্টাব্দে রচিত হয়। অর্থাৎ অষ্টাদশ শতাব্দীতে।
⬐ কাব্য বৈশিষ্ট্য :
(i) ঘনরাম চক্রবর্তীর কাব্যটি 24টি পালায় বিভক্ত—এখানে রাঢ় বাংলার জনজীবন ও ইতিহাস চমৎকার ভাবে ফুটে ওঠে।
(ii) তিনি প্রথম মঙ্গল কাব্যের কবি যিনি কাব্য রচনার কারণ হিসাবে দেবীর স্বপ্নাদেশের কথা উল্লেখ করেন নি।

১২) কৃত্তিবাস কোথা কোথা থেকে তাঁর 'শ্রীরাম পাঞ্চালি' কাব্যের উপকরণ গ্রহণ করেন? তাঁর নিজ সৃষ্ট দুটি মৌলিক কাহিনির নাম লিখুন।
⬐ কাব্যের উপকরণ :
    কৃত্তিবাস বাল্মীকি রামায়ণ ছাড়া কাহিনী গ্রহণ করেন বিভিন্ন পুরাণ থেকে। যেমন— 
 1. জৈমিনির ভারত সংহিতা,
2. যোগাবশিষ্ট রামায়ণ,
3. দেবী ভাগবত,
4. অদ্ভুত পুরাণ,
5. স্কন্দপুরাণ,
6. কালিকা পুরাণ।
⬐ নিজস্ব কাহিনী :
        তাঁর নিজস্ব সৃষ্ট মৌলিক কাহিনী হল—
1. বীরবাহু যুদ্ধ,
2. কৈকেয়ীর বর লাভ,
3. গণেশের জন্ম,
4. 108টি নীলপদ্মের কাহিনি,
5. রাবণের মৃত্যুবাণ হরণ ইত্যাদি।

১৩) কাশীরাম দাস মহাভারতের কটি পর্বের অনুবাদ করেন? পরবর্তীকালে কারা মহাভারতকে অষ্টাদশ পর্বে নিয়ে যায় ?
⬐ কাশীরাম দাস মহাভারতের চারটি (আদি, সভা, বন, বিরাটের কিছু অংশ) পর্বের অনুবাদ করেন। এরপর তিনি মারা যান ।
⬐ পরবর্তীকালে তাঁর পুত্র জয়ন্ত দাস, ভাতুষ্পুত্র—নন্দরাম, ভৃঙ্গরাম, শিষ্য দ্বিজ রঘুনাথ ও জামাতা কৃষ্ণানন্দ বসু সমগ্র মহাভারত গ্রন্থকে অষ্টাদশ পর্বে সমাপ্ত করেন।

১৪) ভাগবতের প্রথম অনুবাদক কে ? তাঁর গ্রন্থের নাম কি ? গ্রন্থটি ‘শ্রীরাম পাঁচালী’র মত জনপ্রিয়তা পায়নি কেন ?
⬐ ভাগবতের প্রথম অনুবাদক মালাধর বসু।
⬐ তাঁর গ্রন্থের নাম ‘শ্রীকৃষ্ণবিজয়’ কাব্য।
⬐ জনপ্রিয়তা না পাওয়ার কারণ :
            কাব্যটি রামায়ণের মতো জনপ্রিয় হয়নি, কারণ হিসাবে বলা যায় ‘শ্রীকৃষ্ণবিজয়’ একমাত্র বৈব সম্প্রদায়ের কাব্য। পারিবারিক জীবন অপেক্ষা যুদ্ধ বিদ্রোহ প্রাধান্য -পেয়েছে, ভাগবতের অনুবাদ ধারাটি ক্ষীণ, পরে মালাধরের মতো বলিষ্ট কবির অভাব।

১৫) কোন্ চরিত গ্রন্থে প্রবন্ধ সাহিত্যের লক্ষণ মেলে? গ্রন্থটির রচয়িতা কে? তিনি কোন্ জেলার কবি? গ্রন্থটির পূর্ব নাম কী ?
⬐ ‘চৈতন্য ভাগবত’- গ্রন্থে প্রবন্ধ সাহিত্যের লক্ষণ মেলে।
⬐ গ্রন্থটির রচয়িতা বৃন্দাবন দাস।
⬐ তিনি পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান (অধুনা পূর্ব বর্ধমান) জেলার কাঁদড়া গ্রামের কবি ।
⬐ গ্রন্থটির পূর্ব নাম ‘চৈতন্যমঙ্গল’৷


১৬) ‘চৈতন্যচরিতামৃত' কার লেখা? তাঁর ব্যক্তি পরিচয় দিন।
⬐ চৈতন্যচরিতামৃত' গ্রন্থটির রচয়িতা কৃষ্ণদাস কবিরাজ ।
⬐ ব্যক্তি পরিচয় :
            কৃষ্ণদাসের জন্ম বর্ধমান জেলার ঝামটপুর গ্রামে। তাঁর জন্মকাল ১৫২৭ খ্রিঃ। তাঁর পিতার নাম ভগীরথ, মাতা সুনন্দা দেবী।

১৭) সপ্তদশ শতকের দুজন মুসলিম কবির নাম লিখুন। তাঁরা কোন রাজার রাজসভা অলংকৃত করেন? তাঁদের কাব্যের নাম লিখুন।
⬐ সপ্তদশ শতকের দু-জন মুসলিম কবি হলেন দৌলত কাজী ও সৈয়দ আলাওল।
⬐ দৌলত কাজী ও সৈয়দ আলাওল আরাকান রাজ শ্রীসুধর্মার রাজ সভা অলংকৃত করেন।
⬐ দৌলত কাজীর কাব্যের নাম – ‘সতীময়না’ এবং সৈয়দ আলাওলের কাব্যের নাম –‘পদ্মাবতী’ ।

১৮) ‘পদ্মাবতী’ কাদের রচনা ? তাঁদের রচিত গ্রন্থটি কি কি ধরনের ?
⬐ ‘পদ্মাবতী’ গ্রন্থটি সৈয়দ আলাওল ও মধুসূদন দত্ত উভয়ই রচনা করেন ।
⬐ সৈয়দ আলাওলের ‘পদ্মাবতী’ – রোমান্টিক কাব্য ।
⬐ মধুসূদন দত্তের ‘পদ্মাবতী’ – পৌরানিক নাটক ।

১৯) “আমায় দে মা তবিল্ দারি”—পদটির পদকার কে? তিনি কোন ধারার কবি? তিনি কোন্ শতকে আবির্ভূত হন? তাঁর অন্য একটি গ্রন্থের নাম লিখুন।
⬐ আমায় দে মা তবিল দারি”–পদটির পদকার রামপ্রসাদ সেন।
⬐ রামপ্রসাদ সেন শাক্ত পদাবলী ধারার কবি।
⬐ তিনি অষ্টাদশ শতকে আবির্ভূত হন।
⬐ তাঁর রচিত অন্য একটি গ্রন্থ হল — ‘কালীকীর্তন’।

২০) কমলাকান্ত ভট্টাচার্য কোন ধারা কবি ? তিনি কোন সময়ে আবির্ভূত হন ? তাঁর কাব্য বৈশিষ্ট্য লিখুন ।
⬐ কমলাকান্ত ভট্টাচার্য শাক্ত পদাবলী ধারার কবি।
⬐ তিনি অষ্টাদশ শতকে আবির্ভূত হন।
⬐ কাব্য বৈশিষ্ট্য :
(i) কমলাকান্ত অলংকৃত বাক্ ও শব্দচাতুর্যের কবি।
(ii) তাঁর পদাবলী তত্ত্ব নির্ভর।
(iii) ভক্তিভাব, কবিত্ব ও শিল্পোৎকর্ষের – ত্রিবেণী সংগম ঘটেছে কবির কাব্যে ।

No comments