Page Nav

HIDE

Classic Header

{fbt_classic_header}

NEW :

latest

সমাস : সমাস সংক্রান্ত পরিভাষা (প্রথম পর্ব)

  কথায় আছে, ‘সমাস শিখতে লাগে ছ’মাস । সত্যিই সমাস শিখতে ছ’মাস লাগে কিনা জানিনা, তবে এটা বলতে পারি মনোযোগ দিয়ে সহজ ভাষায় সমাস শিখলে এক সপ্তাহ...

 

কথায় আছে, ‘সমাস শিখতে লাগে ছ’মাস । সত্যিই সমাস শিখতে ছ’মাস লাগে কিনা জানিনা, তবে এটা বলতে পারি মনোযোগ দিয়ে সহজ ভাষায় সমাস শিখলে এক সপ্তাহের মধ্যেই সমাস শেখা সম্ভব । আমরা আজকের ক্লাসে শিখবো --- সমাস ও সমাস সংক্রান্ত পরিভাষা সম্পর্কে । তোমাদের মধ্যে অনেকের কাছেই এখনো সমাস সংক্রান্ত পরিভাষা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা নেই । আজকের ক্লাসে সমাস সংক্রান্ত পরিভাষা সম্পর্কে আলোচনা করবো । 

আমরা যখন বলি- রাজার পুত্র ঘোড়ায় চড়ে চলেছেন । এই বাক্যকে যখন আমরা লিখবো, তখন কি লিখবো, না লিখবো ---- রাজার পুত্র ঘোড়ায় চড়ে চলেছেন ।
আচ্ছা এটা না লিখে যদি আমরা লিখতাম --- ‘রাজপুত্র ঘোড়ায় চড়ে চলেছেন’ । তাহলে কি কোনো অসুবিধা হত ??? নিশ্চয়ই অসুবিধা হত না । কারণ রাজার পুত্রকেই তো রাজপুত্র বলা হয় । 

 

তাহলে প্রথম লাইন আর দ্বিতীয় লাইন লক্ষ্য করো : প্রথম লাইনে রাজার পুত্র আর দ্বিতীয় লাইনে রাজপুত্র লিখেছি । ‘রাজার পুত্র --- এটা সমান সমান আমরা কি লিখলাম = রাজপুত্র । দেখো এখানে পদের অর্থ একি থাকলো (মানে রাজার পুত্রও যা, রাজপুত্রও তাই অথচ এটা আরো সংক্ষিপ্ত ও সুন্দর হলো । ব্যাকরণে এই সংক্ষিপ্তকরনের নাম হল সমাস

তাহলে সমাস বলতে আমরা কি বুঝবো ??? না আমরা উপরের উদাহরণ থেকে বলতে পারি ---- ‘পরস্পর অর্থ সম্বন্ধযুক্ত দুই বা তার বেশি পদ মিলে একপদে পরিনত হলে , তাকে সমাস বলে ।

এবার আমরা জানবো সমাসের অর্থ কী ? 
 সমাস কথার অর্থ সংক্ষেপ বা এক হওয়া । তবে ব্যাকরণগত অর্থ সংক্ষিপ্তকরণ বা একপদীকরণ ।
 সমাস কথাটির সন্ধিবিচ্ছেদ করলে আমরা পাবো : সম্ + আস
 সমাস কথাটির ব্যুৎপত্তি নির্নয় করলে আমরা পাবো : সম্- √অস + অ(ঘঞ) (এখাসে ‘সম’ -- উপসর্গ, অস -- ধাতু, অ- প্রত্যয়)
 সমাস কথাটির সমাস করলে আমরা পাবো : সম্ (এক) আস (হওয়া)

 সমাসের কাজ :
(a) সংক্ষিপ্তকরণ : ভাষার শব্দবাহুল্যকে বর্জন করে ভাষাকে ঘনপিনদ্ধ করা বা অর্থপূর্ণ করে তোলা ।
(b) সৌন্দর্য বৃদ্ধি : নতুন নতুন শব্দ বা পদ সৃষ্টি করে ভাষাকে সৌন্দর্য মন্ডিত করে তোলা ।
(c) সংহতি স্থাপনা : পদের সাথে পদের সংহতি স্থাপন ।

 সমাসের উপাদান
সমাস প্রক্রিয়ার প্রধান উপাদান হল তিনটি : সমস্যমান পদ, সমস্ত পদ ও ব্যাস বাক্য । সমস্যমান পদের আবার দুটি অংশ থাকে -- পূর্বপদ ও পরপদ । এই উপাদানগুলিকেই সমাস সংক্রান্ত পরিভাষা বলে । চলোে একটা উদাহরণের সাহায্যে এই বিষয়গুলি একটু ক্লিয়ার করে দিই ।
রাজার পুত্র = রাজপুত্র 
--- এখানে রাজপুত্র পদটি কিভাবে পেলাম ? রাজার আর পুত্র - এই দুটি পদ মিলে পেলাম । অর্থাৎ এই দুটি অংশ হল সমস্যমান পদ আর রাজপুত্র -- এটাকে বলা হয় সমস্ত পদ । আর সমস্যমান পদের প্রথম অংশ অর্থাৎ রাজার হল পূর্বপদ আর পরের অংশ পুত্র হল পরপদ বা উত্তরপদ ।

 

বিষয়টি আশাকরিছি বুঝতে পারলে । এবার চলো সংজ্ঞাগুলো কেমন হতে পারে একটু জানার চেষ্টা করি ।
 সমস্ত পদ : পরস্পর অর্থ সম্বন্ধযুক্ত দুই বা তার বেশি পদ মিলে যে পদ গঠিত হয়, তাকে সমস্ত পদ বলে ।

সমস্যমান পদ : যে পদের সমন্বয়ে সমস্ত পদ গড়ে ওঠে, তাদের প্রত্যেকটিকে সমস্যমান পদ বলে । দেখো এখানে ‘রাজার’ ও ‘পুত্র’ দুটি সমস্যমান পদ রয়েছে ।
                   এই সমস্যমান পদের দুটি অংশ থাকে । যেমন : পূর্বপদ ও পরপদ ।
 পূর্বপদ : সমস্যমান পদের প্রথম অংশকে বলা হয় পূর্বপদ । যেমন এখানে রাজা
 পরপদ বা উত্তরপদ : সমস্যমান পদের প্রথম অংশের পরের অংশকে বলা হয় পরপদ বা উত্তর পদ। যেমন এখানে পুত্র

ব্যাসবাক্য :
এবার আসি : ব্যাসবাক্যে -----
 ব্যাস বাক্যের অপর নাম বিগ্রহবাক্য সমাস বাক্য ।
 ব্যাস কথাটির অর্থ হল বিস্তার ।
 ব্যাস শব্দের ব্যুৎপত্তি হল --- বি--- অস + অ (বি উপসর্গ, অস্ ধাতু ) বি কথার অর্থ হল বিস্তার, অস কথার অর্থ থাকা । অর্থাৎ ব্যাস কথার অর্থ বিস্তৃত থাকা ।
        অর্থ বোঝানোর জন্য সমস্তপদকে যে বাক্য বা বাক্যাংশের দ্বারা ব্যাখ্যা করা হয়, তাকে ব্যাসবাক্য বা বিগ্রহবাক্য বলে । এখানে ব্যাস বাক্য হল রাজার পুত্র

আজকের ক্লাস এখানেই শেষ করছি । আশা করছি সমাস সংক্রান্ত পরিভাষাগুলি তোমরা বুঝতে পেরেছো । পরের ক্লাসে সমাস ও তার শ্রেণীবিভাগের বিস্তারিত আলোচনা করবো । আজকের আলোচনার ভিডিও ক্লাস দেখতে চাইলে অবশ্যই নীচের লিঙ্কে ক্লিক করো । আর ক্লাসগুলি ভালো লাগলে চ্যানেলটিকে অবশ্যই সাবসক্রাইব করে রেখো ।

ভিডিও লিঙ্ক :  https://youtu.be/FG2fvtKxA2M  (এখানে ক্লিক করুন)
চ্যানেল লিঙ্ক : https://youtube.com/@Bengaliguidance  (এখানে ক্লিক করুন )


 

No comments