Page Nav

HIDE

Classic Header

{fbt_classic_header}

NEW :

latest

‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ আবিস্কারকাল, প্রকাশকাল ও কিছু কথাঃ

চর্যাপদ যেমন প্রাচীনযুগের প্রথম ও একমাত্র সাহিত্যিক নিদর্শন, তেমনি মধ্যযুগের প্রথম সাহিত্যিক নিদর্শন হল বড়ু চণ্ডীদাসের ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’। ম...


চর্যাপদ যেমন প্রাচীনযুগের প্রথম ও একমাত্র সাহিত্যিক নিদর্শন, তেমনি মধ্যযুগের প্রথম সাহিত্যিক নিদর্শন হল বড়ু চণ্ডীদাসের ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’। মধ্যযুগের বাংলা ভাষার আদি নিদর্শন হিসেবে এই গ্রন্থের একটি ঐতিহাসিক মর্যাদা সর্বজনস্বীকৃত। ষোড়শ শতাব্দীতে বা তার আগে বৈষ্ণব সাহিত্যের যে প্রসার তার প্রথম অঙ্কুর এই ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ কাব্যে।

পুঁথি আবিষ্কারঃ
       বাংলা সাহিত্যের জহুরী বসন্তরঞ্জন রায় বিদ্বদ্বল্লভ শ্রীকৃষ্ণকীর্তনের পুঁথি আবিষ্কার করেন ১৯০৯ খ্রিস্টাব্দে বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুরের কাছাকাছি কাঁকিল্যা গ্রামনিবাসী শ্রীনিবাস আচার্যের দৌহিত্র বংশধর শ্রীদেবেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের গোয়াল ঘরের মাচা থেকে।

পুঁথি প্রকাশঃ
        ১৯১৬ খ্রিস্টাব্দে বসস্তরঞ্জন রায় বিদ্বদ্বল্লভ ‘বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ’ থেকে গ্রন্থাকারে পুঁথিটিকে প্রকাশ করেন। তিনি গ্রন্থের নাম দেন—‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’।

পুঁথি পরিচয়ঃ
        শ্রীকৃষ্ণকীর্তনের যে পুঁথিটি বসন্তরঞ্জন আবিষ্কার করেছিলেন সেটিই এই কাব্যের একমাত্র অশু পুথি। পুঁথিটি প্রাচীন বাংলার তুলোট কাগজে লিখিত। এর আদ্যস্ত খণ্ডিত, ভিতরেও কয়েকটি পৃষ্ঠা হারিয়ে গেছে বা নষ্ট হয়ে গিয়েছে। রচনাকারের ভণিতা ছাড়া তাঁর সম্বন্ধে অন্য কোন পরিচয় পুঁথিতে নেই। পুঁথিতে আখ্যাপত্র ও পুষ্পিকা নষ্ট হয়ে গিয়েছে। তাই গ্রন্থের নাম, রচনাকাল, পুঁথি নকলের সন তারিখ কিছুই জানা যায়নি। আলোচ্য পুঁথিটি বনবিষ্ণুপুরের রাজগ্রন্থাগারে রক্ষিত ছিল।

নামকরণঃ
        পুঁথির আখ্যাপত্র ও পুষ্পিকা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় গ্রন্থের নামকরণ নিয়ে মতভেদ সৃষ্টি হয়েছে। ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ নামটি আবিষ্কারক বসন্তরঞ্জনের দেওয়া। এই নাম দেওয়ার কারণ হিসেবে বসন্তরঞ্জন গ্রন্থের প্রথম সংস্করণের ভূমিকায় জানিয়েছেন— 
“দীর্ঘকাল যাবৎ চণ্ডীদাস বিরচিত কৃষ্ণকীর্তনের অস্তিত্ব বর্তমান থাকায় আলোচ্য কৃষ্ণলীলা
বিষয়ক কাব্যটির অনুরূপ নাম নির্দেশ করা হল।”

রচনাকালঃ
        শ্রীকৃষ্ণকীর্তনের নামকরণ নিয়ে যেমন মতভেদ রয়েছে, তেমনি রচনাকাল নিয়েও পণ্ডিতেরা ঐকমত্যে আসতে পারেন নি। কারণ শ্রীকৃষ্ণকীর্তনের প্রাপ্ত পুঁথিটি খণ্ডিত ও আদ্যন্তহীন। সেজন্য পুঁথির অন্তরঙ্গ ও বহিরঙ্গ বিচারের মাধ্যমে রচনাকাল সম্বন্ধে একটা সিদ্ধান্ত করতে হয়। মনে করা হয় পঞ্চদশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে কাব্যটি রচিত হয়েছিল ।

কবি পরিচিতিঃ
        শ্রীকৃষ্ণকীর্তনে ৪১৮টি  (অসিতকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে ৪১৫টি) পদের  মধ্য আলাদা করে ‘বড়ু চণ্ডীদাসে’র ভণিতা আছে তেতাল্লিশ বার। ভণিতাগুলিতে বিভিন্ন নাম পাওয়া যায়—বড়ু চণ্ডীদাস, চণ্ডীদাস, অনন্ত বড়ু চণ্ডীদাস ইত্যাদি। এর ফলেই সৃষ্টি হয়েছে চণ্ডীদাস সমস্যা। কেউ মনে করেন কবির নাম ‘অনন্ত’, ‘চণ্ডীদাস’ তার উপাধি। কিন্তু ভণিতায় শুধু ‘অনন্ত' কোথাও ব্যবহার করেন নি। তাই ‘অনস্ত’ তার নাম নয়, এই নাম তার অপ্রচলিত নাম হতে পারে কিম্বা গায়েনের দেওয়া নাম হতে পারে। তাই বড়ু চণ্ডীদাস আসল নাম।

কাব্য কাহিনীঃ
        রাধাকৃষ্ণের প্রেমলীলা শ্রীকৃষ্ণকীর্তনের প্রধান উপজীব্য। কৃষ্ণের জন্ম থেকে আরম্ভ করে মথুরাগমন, মথুরা থেকে কিছুক্ষণের জন্য প্রত্যাবর্তন এবং রাধাকৃষ্ণের পুনর্মিলনের পর কৃষ্ণের কংস ধ্বংসের জন্য পুনরায় মথুরা গমন ও রাধার বিলাপ—এই পর্যন্ত কাহিনীর ধারা বিস্তৃত, তারপর পুঁথিটি খণ্ডিত।

খন্ড বিভাগঃ
        শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যটি ১৩টি খণ্ডে বিভক্ত। খণ্ডগুলি হল—জন্মখণ্ড, তাম্বুলখণ্ড, দানখণ্ড, নৌকাখণ্ড, ভারখণ্ড, ছত্রখণ্ড, বৃন্দাবন খণ্ড, কালিয়দমন খণ্ড, যমুনাখণ্ড, হারখণ্ড, বাণখণ্ড, বংশীখণ্ড ও রাধাবিরহ।

কাব্য আলোচনাঃ
জন্মখন্ডঃ রাধাকৃষ্ণের ভাগবর্তী পরিচয় আছে। কংসের অত্যাচার থেকে ধরিত্রী এবং ধরিত্রীবাসীকে বাঁচানোর জন্য ভগবান বিষ্ণু কৃষ্ণরূপে এবং লক্ষ্মীদেবী রাধরূপে মর্ত্যে জন্মগ্রহণ করেন।
তাম্বুল খন্ডঃ এখানে লৌকিক জীবনের কথাই প্রাধান্য পেয়েছে। তাম্বলু খণ্ডে রাধার প্রতি কৃষ্মের পূর্বরাগ বর্ণিত হয়েছে। কৃয় বড়াই-এর মাধ্যকে রাধাকে পান-সন্দেশ পাঠিয়ে প্রেম নিবেদন করে। রাধা তা গ্রহণ করেনি।
দানখন্ডঃ এখানে দেখা যায় প্রত্যাখাত কৃষ্ণ এবং অপমানিত বড়াই ষড়যন্ত্র করে রাধাকে কৃয়ের কাছে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য করেছে ।
নৌকাখন্ডঃ  এই খন্ডে কৃষ্ণ মাঝি সেজে রাধাকে তার পসরা নিয়ে পার করিয়ে দেওয়ার ছলে জলবিহারে বাধ্য করানোর কাহিনী বর্ণিত হয়েছে।
ভারখন্ডঃ রাধা এখানে নিজের রূপ যৌবন সম্পর্কে সচেতনা এক নারী। তবে এই অংশটি খণ্ডিত।
ছত্রখন্ডঃ এই খন্ডে রাধার কাছে মিলনের প্রতিশ্রুতি পেয়ে কৃষ্ণ মথুরার পথে রৌদ্রের উত্তাপ থেকে রাধাকে রক্ষা করার জন্য রাধার মাথায় ছত্র ধরে চলেন।
বৃন্দাবনখন্ডঃ রাধা এখানে একজন কামকুশলা কলাবতী নারী, বৃন্দাবনের মনোরম পুষ্পকুঞ্জে কৃষ্বের সঙ্গে তার মিলনের কাহিনী বর্ণিত হয়েছে।
কালিয়দমন খন্ডঃ   এই খন্ডে  কৃষ্ণের দ্বারা কালিদহের কালিয় নাগ দমনের কাহিনী বর্ণিত হয়েছে।
যমুনা খন্ডঃ গোপিনীদের সঙ্গে কৃষ্ণের জলকেলি এবং বস্ত্রচুরির কাহিনী।
হারখন্ডঃ রাধার হার চুরির কাহিনী এবং মা যশোদা কর্তৃক কৃষ্ণকে তিরস্কার।
বাণখন্ডঃ ক্ষুদ্ধ মদনবাণ নিক্ষেপ করে রাধাকে হত্যা করে। আর বড়াই নারী হত্যার জন্য কৃষ্ণকে তীব্রভাবে তিরস্কার করে। কৃষ্ণ আবার রাধাকে বাঁচিয়ে তোলে।
বংশী খন্ডঃ কৃষ্ণ অনুগামিনী রাধার এক নতুন মূর্তি দেখা যায়।কৃষ্ণের বাঁশির সুরে রাধার মন চঞ্চল হয়ে ওঠে। গৃহস্থালীর কাজ-কর্ম রাধা ভুল করে। পরে বড়াইকে দিয়ে বাঁশি চুরি করিয়ে আনে। পরে অবশ্য ফেরৎ দেয় ।
রাধাবিরহঃ এখানে কৃষ্বের এক নতুন রূপ। রাধার প্রতি উদাসীন— ‘গততৃষ্ণ কৃষ্ণ’। অন্যদিকে রাধা কৃষ্বের জন্য অন্ধ উন্মত্ত। বড়াইএর চেষ্টায় বৃন্দাবনের মিলনকুঞ্জে দু'জনের মিলন ঘটে। কিন্তু কর্তব্যের আহ্বানে কৃষ্ণ মিলন তৃপ্তা ঘুমন্ত রাধাকে ফেলে রেখে মথুরায় চলে যায়।


খন্ড ও পদ সংখ্যাঃ
  • ‘জন্মখন্ড’ - ৯টি , 
  • ‘তাম্বুলখন্ড’ - ২৬টি, 
  • ‘দানখন্ড’ - ১১২টি, 
  • ‘নৌকাখন্ড’ - ৩০টি, 
  • ‘ভারখন্ড’ - ২৮টি, 
  • ছত্রখন্ড - ৯
  • ‘বৃন্দাবনখন্ড’ - ৩০টি, 
  • কালীয়দমনখন্ডে - ১০
  • ‘যমুনাখন্ড’ - ২২টি,
  • ‘ বাণখন্ড’ - ২৭টি, 
  • ‘বংশীখন্ড’ - ৪১টি, 
  • ‘রাধাবিরহ’ - ৬৯টি ।
খন্ড ও ঋতুঃ
  • ‘তাম্বুল খন্ড’ - বসন্তকাল, 
  • ‘দানখন্ড ’- গ্রীষ্মকাল, 
  • ‘নৌকা খন্ড ’- বর্ষাকাল, 
  • ‘ভার খন্ড’ - শরৎকাল, 
  • ‘বৃন্দাবন খন্ড’ - বসন্তকাল, 
  • ‘বংশী খন্ড’ - বসন্তকাল।

প্রবাদ - প্রবচনঃ
        শ্রীকৃষ্ণকীর্তনে যে প্রবাদ প্রবচনগুলি পাওয়া যায়, সেগুলি হলঃ
(১) ‘ললাট লিখন খন্ডন না জাএ’ (দানখন্ড) ,
(২) ‘বন পোড়ে আগ বড়ায়ি জগ্জনে জানি / মোর মন পোড়ে যেহ্ন কুম্ভীরের পানি’ (বংশীখন্ড) ।

পরবর্তী বাংলা সাহিত্যে প্রভাবঃ
        যে কোন সৃষ্টিশীল সাহিত্যের বৈশিষ্ট্য হল এই, পরবর্তী উত্তরাধিকার রেখে যাওয়া। উত্তরাধিকারীর গাত্রে লগ্ন হয়ে থাকে পূর্বসূরীর স্নেহস্পর্শ। তেমনি আদি মধ্য যুগের নিদর্শন শ্রীকৃষ্ণকীর্তনের প্রভাব পরবর্তীকালের বাংলা সাহিত্যে লগ্ন হয়ে রয়েছে। বৈষ্ণব পদাবলি,মঙ্গলকাব্য, লোকসাহিত্য প্রভৃতিতে শ্রীকৃষ্ণকীর্তনের প্রভাব যথেষ্ট।

ঐতিহাসিক গুরুত্বঃ
        ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ এমন এক গ্রন্থ, এমন এক সময়ে রচিত হয়েছিল—যার মধ্যে নিহিত ছিল ঐতিহাসিক তাৎপর্যের বীজ। কেননা তুর্কী বিজয়ের পর দু-শতাব্দী ধরে বাংলা সাহিত্যে চলছিল বন্ধ্যা যুগ, সেই যুগের বন্ধ্যাত্বকে সরিয়ে শ্রীকৃষ্ণকীর্তনের আবির্ভাব নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ। সেই শুরুত্বের দিক থেকে বিষয়গুলি নিম্নে আলোচিত হল।
(এক) আদি-মধ্য যুগের প্রথম নিদর্শন হিসেবে শ্রীকৃষ্ণকীর্তনের ভাষাতাত্ত্বিক গুরুত্ব স্বীকৃত।
(দুই) 'শ্ৰীকৃষ্ণকীর্তন' আবিষ্কৃত হওয়ার পর চণ্ডীদাস সমস্যার উৎপত্তি। বলাবাহুল্য মধ্যযুগের সাহিত্যে সেই সমস্যার এখনো সুষ্ঠু সমাধান হয়নি।
(তিন) রাধাকৃষ্ণকথায় প্রথম আখ্যানকাব্য শ্রীকৃষ্ণকীর্তন। যে কৃষ্ণকথা সংস্কৃত কাব্যে, প্রাকৃত-অপভ্রংশ প্রাকৃত শ্লোকে বিচ্ছিন্নভাবে ছিল, বাংলা সাহিত্যে তারই প্রথম কাব্যরূপ ‘শ্ৰীকৃষ্ণকীর্তন'।
(চার)তুর্কীবিজয় উত্তর বাংলার সমাজ ও সংস্কৃতির একটি বিচ্ছিন্ন রূপ শ্রীকৃষ্ণকীর্তনে লক্ষ করা যায়। সেদিক থেকে এর তাৎপর্য রয়েছে।
(পাঁচ) উক্তি-প্রত্যুক্তিমূলক নাটগীতি বাংলা সাহিত্যে এই প্রথম।

এক নজরে শ্রীকৃষ্ণকীর্তণ


1. ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ আদি মধ্য যুগের বাংলা সাহিত্যের প্রথম নিদর্শন  ।
2. ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ কাব্যের রচয়িতা বড়ু চন্ডীদাস ।
3. ‘বড়ু’ কথার অর্থ ঠাকুর / ব্রাহ্মণ ।
4. ‘বড়ু’ শব্দটি এসেছে ‘বটু’ শব্দ থেকে ।
5. বড়ু চন্ডীদাস বাসুলি দেবীর সেবক / উপাসক ছিলেন ।
6. ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ কাব্যের প্রকৃত নাম ‘শ্রীকৃষ্ণসন্দর্ভ’ ।
7. শ্রীকৃষ্ণকীর্তনের আবিস্কৃত পুঁথিতে প্রাপ্ত চিরকুটে ‘শ্রীকৃষ্ণসন্দর্ভ’ নাম লেখা ছিল ।
8. ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ নামকরন করেন বসন্তরঞ্জন রায় বিদ্ববল্লভ ।
9. ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ কাব্যের আবিস্কারক ও প্রকাশক হলেন বসন্তরঞ্জন রায় বিদ্ববল্লভ ।
10. ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ কাব্যের আবিস্কারক কাল ১৯০৯ খ্রিষ্টাব্দ ।
11. বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুরের কাঁকিল্যা গ্রামের দেবেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের বাড়ির গোয়াল ঘরের মাচা থেকে ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ কাব্যের পুঁথি আবিস্কৃত হয় ।
12. শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যের পুঁথি তুলোট কাগজে লিখিত ।
13. ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ কাব্যের প্রকাশক কাল ১৯১৬ খ্রিষ্টাব্দ ।
14. ‘বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ’থেকে ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ কাব্য প্রকাশিত হয় ।
15. ‘বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ’থেকে  ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ কাব্য প্রকাশের পর এক কপি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে দিয়েছিলেন ।
16. ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ কাব্যের রচনাকাল আনুমানিক চতুর্দশ শতকের শেষভাগ থেকে পঞ্চদশ শতকের প্রথম ভাগ ।
17. ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ কাব্যটি মূলত  রাধাকৃষ্ণ লীলা বিষায়ক নাট্যগীতি কাব্য ।
18. ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ কাব্যের মোট খন্ড ১৩ টি ।
19.‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ কাব্যের খন্ডগুলির নাম হলঃ জন্মখন্ড, তাম্বুলখন্ড, দানখন্ড, নৌকাখন্ড, ভারখন্ড, ছত্রখন্ড, বৃন্দাবন খন্ড, কালিয়দমন খন্ড, যমুনা খন্ড, হারখন্ড, বাণখন্ড, বংশীখন্ড ও রাধাবিরহ ।
20. ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ কাব্যের শেষ খন্ডের নাম ‘রাধাবিরহ’ ।
21. ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ কাব্যের বৃহত্তম খন্ডের নাম দানখন্ড ।
22. ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ কাব্যের ক্ষুদ্রতম খন্ড হল জন্ম খন্ড ।
23. ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ কাব্যের প্রধান চরিত্র ৩টি । রাধা, কৃষœ ও বড়াই ।
24. ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ কাব্যের দূতী চরিত্র বড়াই ।
25. ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ কাব্যের দুটি অপ্রধান চরিত্র - আইহন এবং আইহনের মা ।
26. ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ কাব্যের পদের সংখ্যা ৪১৮ টি ।
27. ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ কাব্যে মোট শ্লোক সংখ্যা ১৬১টি ।
28. ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ কাব্যের সংস্কৃত শোক সংখ্যা ১৬১ ।
29. ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ কাব্যে ৩২টি রাগ রাগিনীর উল্লেখ পাওয়া যায় ।
30. ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ কাব্যে খন্ডিত পদের সংখ্যা ১৫টি ।
31. ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ কাব্যে সম্পূর্ন পদের সংখ্যা ১০টি ।
32. ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ কাব্যের যমুনা খন্ডে নিজস্ব কোনো পদের উল্লেখ নেই ।
33. ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ কাব্যের উপর  জয়দেবের ‘গীতগৌবিন্দম’ কাব্যের প্রভাব রয়েছে
34. বড়ু চন্ডীদাস তার ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তনের’ উপাদান সংগ্রহ করেছেন জয়দেবের ‘গীতগোবিন্দ’ ও ‘ভাগবত পুরাণ’ থেকে  ।
35. ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ কাব্যের ছন্দ - মিশ্রবৃত্ত ছন্দ ।
36.  ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ কাব্যের মুখবন্ধ লেখেন রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদী ।
37. শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ কাব্যে বড়ু চন্ডীদাসের ভনিতা ব্যবহৃত হয়েছে  ৪৩ বার ।
38. ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ কাব্যের কাহিনী কাল আড়াই বছর ।
39. ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ কাব্যে উল্লিখিত নিদামন্ত্রের নাম ‘নিন্দাউলী’ ।
40. গবেষকগণ মনে করেন ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ কাব্যের প্রক্ষিপ্ত খন্ড ‘রাধাবিরহ’।
41. বিমান বিহারী মজুমদারের মতে - ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ কাব্যের প্রক্ষিপ্ত খন্ড ‘রাধাবিরহ’।
42. ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তনের’ নৌকাখন্ড ভাগবতে নেই ।
43. ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ কাব্যে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে  পয়ার ও ত্রিপদী ছন্দের প্রয়োগ লক্ষ্য করা যায় ।
44. ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ কাব্যে ‘চন্ডীদাস’ শব্দের ভনিতা ১০৭ বার ব্যবহৃত হয়েছে ।
45. ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ কাব্যে ঝুমুর গানের লক্ষণ আছে ।
46. ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ কাব্যে ‘অনন্ত বড়ু চন্ডীদাস’ শব্দের  ভনিতা ৭ বার ব্যবহৃত হয়েছে ।
47. ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ কাব্যে উল্লিখিত --- 
  • কৃষ্ণের পিতার নাম --- বাসুদেব ।
  • কৃষ্ণের মাতার নাম ---- দেবকী ।
  • রাধার পিতার নাম --- সাগর ।
  • রাধার মাতার নাম ---- পদুমা ।
  • রাধার শ্বশুরের নাম ---- গোল ।
  • রাধার শ্বাশুরির নাম --- জটিলা ।

3 comments