বৌদ্ধ সহজিয়াদের সাধনতত্ত্ব ও সাধন প্রণালীকেন্দ্রিক চর্যাগান হল বাংলা সাহিত্যের আদি নিদর্শন। মাগধী অপভ্রংশের খোলস ত্যাগ করে বাংলা ভাষা সদ্যো...
ঊনবিংশ শতকের শেষভাগে রাজা রাজেন্দ্রলাল মিত্র সর্বপ্রথম বৌদ্ধ তান্ত্রিক সাহিত্যের বিচিত্র রূপ সুধীজনের কাছে তুলে ধরেন। তিনি নেপাল ভ্রমণ করে এই শ্রেণীর বহু পুঁথি উদ্ধার করেন। রাজেন্দ্রলালের মৃত্যুর পর মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর ওপর সরকার কর্তৃক পুঁথি অনুসন্ধানের ভার পড়ে। এই সময়ে শাস্ত্রী মহাশয় তৃতীয়বার নেপাল যাত্রা করেন এবং ১৯০৭ খ্রিষ্টাব্দে নেপালের রাজদরবার থেকে চর্যাপদের পুঁথি আবিষ্কার করেন।
পুঁথি পরিচয়ঃ
হরপ্রসাদ শাস্ত্রী আবিষ্কৃত চর্যাপদের পুঁথিটি তালপাতায় লেখা। একটি পাতার উভয় পৃষ্ঠাতেই পক্তিগুলি একটানা সাজানো। প্রতিটি পৃষ্ঠায় পাঁচটি করে পঙক্তি। লুপ্ত পাতাগুলি বাদে পুঁথির পাতার সংখ্যা মোট ৬৪টি। শেষের পাতার পৃষ্ঠা সংখ্যা ৬৯। অর্থাৎ মোট পাঁচটি পাতা নেই। সেগুলি হল ৩৫, ৩৬, ৩৭, ৩৯ ও ৬৬ সংখ্যক পৃষ্ঠা। প্রথম পাতার দ্বিতীয় পৃষ্ঠা থেকে গ্রন্থের শুরু। পুঁথিটি শুরু হয়েছে ‘নমঃ শ্রীবজ্রযোগিন্যৈ’ শব্দ দিয়ে। তারপর টীকা এবং টীকার শেষে গানের ক্রমিক সংখ্যা। পুঁথিতে গানের সংখ্যা পঞ্চাশটি হলেও মাঝখানের ও শেষের কয়েকটি পাতা না পাওয়ায় ২৩ সংখ্যক গানের ছয়টি চরণ ছাড়া ২৪, ২৫ ও ৪৮ সংখ্যক গান সম্পূর্ণ লুপ্ত।
১৯১৬ খ্রিস্টাব্দে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ থেকে ‘হাজার বছরের পুরাণ বাঙ্গালা ভাষায় বৌদ্ধগান ও দোহা’ নামে যে গ্রন্থটি শাস্ত্রী মহাশয় প্রকাশ করেন—চর্যাপদ তার অন্তর্ভুক্ত। এই সংকলনে চারটি গ্রন্থ ছিল—
(১) 'চর্যাচর্য-বিনিশ্চয়’,
(২) ‘সরহপাদের দোহা’,
(৩) 'কৃষ্ণপাদের দোহা’ ও
(৪) ‘ডাকার্ণব’।
নামকরণ বিতর্কঃ
চর্যাপদ মুদ্রিত হবার পর পুঁথির নামকরণ নিয়ে মতভেদ সৃষ্টি হয়। আবিষ্কারক হরপ্রসাদ শাস্ত্রী গ্রন্থটির নাম দেন ‘চৰ্য্যাচর্য্যবিনিশ্চয়’। এই গ্রন্থের মুখবন্ধে তিনি লিখেছিলেন—“১৯০৭ সালে আবার নেপালে গিয়া আমি কতকগুলি পুঁথি দেখিতে পাইলাম। একখানির নাম ‘চর্য্যাচর্য্যবিনিশ্চয়'। উহাতে কতকগুলি কীর্তনের গান আছে ও তাহার সংস্কৃত টীকা আছে। গানগুলি বৈষ্ণবদের কীর্ত্তনের মত, গানের নাম ‘চর্যাপদ’।”
জাহ্নবীকুমার চক্রবর্তী তাঁর 'চর্যাগীতির ভূমিকা গ্রন্থে যথার্থই লিখেছেন নাম-বিতর্কের দুটি নিরিখ। এক দল সংকলিত গীতের সূত্রে নামকরণ করতে চেয়েছেন, অন্য দলের বিবেচ্য সংস্কৃত টীকা। পণ্ডিতদের মধ্যে কে কোন নাম প্রয়োগ করতে চান তা প্রথমে উল্লেখ করা যাক।
নামকর্তা প্রদত্ত নাম
বিধুশেখর ভট্টাচার্য --- আশ্চর্যচর্যাচয়
প্রবোধচন্দ্র বাগচী ---- চর্যাগীতিকোষ
সুকুমার সেন ----- চর্যাগীতি পদাবলী
তিব্বতি অনুবাদের সাক্ষ্য মান্য করে যদি স্বীকার করে নেওয়া হয়, এটি পদসংকলন পুথি নয়, টীকা, তাহলে ‘চর্যাগীতিকোষ', 'চৰ্য্যাপদ', 'চর্যাগীতি পদাবলী' ইত্যাদি নাম অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়বে। সেক্ষেত্রে ‘চর্য্যাচর্য্যবিনিশ্চয়’ নামটি দৃষ্টি আকর্ষণ করে। বিধুশেখর ভট্টাচার্য টীকার বস্তুনিদের্শক শ্লোকের 'আশ্চর্যচর্যাচয়' শব্দসাপেক্ষে এর নাম তাই রাখতে চেয়েছিলেন। তবে আবিষ্কারক সম্পাদক হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর সম্মানার্থে 'চর্য্যাচর্যবিনিশ্চয়' নাম অপরিবর্তিত রাখার পক্ষপাতী অনেকেই। যে গ্রন্থে সিদ্ধাচার্যদের চর্য (আচরণীয়) ও অচর্য (অনাচরণীয়) নিশ্চিতরূপে নির্দেশ করা হয়েছে তাই নাকি ‘চর্য্যাচর্য্যবিনিশ্চয়'। বিশ্বভারতী প্রকাশিত 'চর্যাগীতিকোষ'-এর ভূমিকায় ভিক্ষুশাস্ত্রীও এই মত প্রকাশ করেছেন। অবশ্য সুকুমার সেন মনে করেন 'চর্যাচর্যবিনিশ্চয়' নামটি অশুদ্ধ, শুদ্ধ রূপটি হওয়া উচিত 'চর্য্যাশ্চর্য্য বিনিশ্চয়'।
রচনাকাল বিতর্কঃ
প্রাচীন ও মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্য নিদর্শনগুলির কাল নির্ণয়ের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। চর্যাগীতির রচয়িতা একজন নন, বহুজন। এই সমস্ত বৌদ্ধ সিদ্ধাচার্য সম্বন্ধে নানা কিংবদন্তি প্রচলিত ছিল। আবার এঁদের রচিত অন্যান্য নানা সৃষ্টির পরিচয় পাওয়া যাচ্ছে। এই সূত্রগুলিকে একত্রিত করে চর্যাগাতির রচনাকাল নির্ণয়ের চেষ্টা করা হয়েছে। তবে গবেষকরা এ বিষয়ে সহমত হতে পারেননি। প্রথমে আমরা চর্যার রচনাকাল হিসেবে বিশিষ্ট পণ্ডিতবর্গ কে কোন সময়টিকে কী কারণে নির্দেশ করেছেন তা সারণি আকারে সাজিয়ে দিচ্ছিঃ
রচনাকাল নির্দেশকের নাম | রচনাকাল | সিদ্ধান্তের কারণ |
সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় | দশম শতাব্দীর মধ্যভাগ থেকে দ্বাদশ শতাব্দীর শেষভাগ। | হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর মতে আদি সিদ্ধাচার্য লুইপাদ অতীশ দীপঙ্করের ‘অভিসময়বিভঙ্গ’ রচনায় সাহায্য করেন। অতীশ দীপঙ্কর ১০৩৮ খ্রিস্টাব্দে তিব্বতে যান চট্টোপাধ্যায় লুইকে অতীশের 'elder contemporary' মনে করে রচনাকালের ঊর্ধ্বসীমা হিসেবে ৯৫০ খ্রিস্টাব্দকে নির্দেশ করেছেন। নিম্নসীমায় রয়েছেন কাহ্নপাদ। কাহ্নপাদের ‘হেরজ-পঞ্জিকা যোগর-মালা'র অনুলিপি ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত হয়। সুতরাং কাহ্নপাদের জীবৎকালের নিম্নসীমা ১১৯৯ খ্রিস্টাব্দ। |
রাহুল সাংকৃত্যায়ন
| অষ্টম থেকে একাদশ শতাব্দীর মধ্যে।
| তাঁর মতে আদি সিদ্ধাচার্য সরহপাদ। ইনি শাস্ত রক্ষিতের সমসাময়িক। শান্ত রক্ষিত ভোট-সম্রাট "খি-স্রোঙ-দে চর্ন-এর রাজত্বকালে (৭৫৫-৭৮০ ) ঠিকাতে যান। সাংকৃত্যায়ন মনে করেন লুইপাদ ধর্মপালের রাজত্বে শেষভাগ (৮০০) পর্যন্ত বর্তমান ছিলেন। |
মহম্মদ শহীদুল্লাহ | সপ্তম শতাব্দীতে চর্যাপদের রচনা শুরু। | শহীদুল্লাহের মতে আদি সিদ্ধাচার্য শবরপাদ । শবরপাদ কমলশীলের জন্য সংস্কৃতে দুটি বই লেখেন। কমলশীলও তিব্বত-রাজ কি--- চন-এর আহ্বানে ৭৬২ খ্রিস্টাব্দে তিব্বতে যান। এছাড়াও কম্বলাম্বরপাদ রাজা ইন্দ্রভৃতির দীক্ষাগুরু। ইপ্রভৃতি পদসম্ভবের (৭২১/২২) পালকপিতা। সুতরাং কম্বলাম্বরপাদ সপ্তম শতাব্দীর লোক। |
সুনীতিকুমার তাঁর বিচারে সিদ্ধাচার্যদের নিয়ে প্রচলিত কাহিনি ঐতিহ্যকে গুরুত্ব দেননি। সিলষ্ঠা লভি, লামা তারনাথ, বিনয়তোষ ভট্টাচার্য প্রমুখ পণ্ডিতবর্গ কিংবদন্তিগুলিকে গুরুত্ব দিয়েছেন। কিংবদন্তি পাথুরে প্রমাণ নয়। তাই চর্যাগীতিগুলির রচনাকালের সীমা খ্রিস্টীয় দশম থেকে দ্বাদশ শতাব্দীর মধ্যে ধরা যেতে পারে।
সন্ধ্যাভাষাঃ
হরপ্রসাদ শাস্ত্রী মশাইয়ের মতে, সন্ধ্যাভাষা হল আলো আঁধারি ভাষা-কতক আলো-কতক অন্ধকার খাণিক বোঝা যায় খাণিক বোঝা যায় না। বিধৃশেখর শাস্ত্রী মহাশয়ের মতে, ‘সন্ধ্যা’ শব্দের অর্থ হল – ‘অভিপ্রেত অর্থ। পাঁচকড়ি বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন - সন্ধ্যাভাষা হল সন্ধ্যাদেশের ভাষা, টীকাকার মুণি দত্তের মতে, গূঢ়ার্থ প্রচ্ছন্ন রেখে অস্পষ্টতার আবরণই এই ভাষার লক্ষণ।
পদকর্তা ও পদ সংখ্যাঃ
চর্যাপদের মোট পদকর্পতা সংখ্যা ২৩ জন (মতান্তরে ২৪জন) এবং পদ সংখ্যা ৫০টি ( মতান্তরে ৫১টি ) । চর্যাপদের প্রাপ্ত পদের সংখ্যা সাড়ে ছেচল্লিশটি । চর্যার শেষ পাতার সংখ্যা ৬৯ । তবে ৩৫, ৩৬, ৩৭, ৩৮, ৬৫ সংখ্যক পত্রগুলি পুথিতে নেই । পুথির প্রতিপত্রের দুই পৃষ্ঠাতেই লেখা।
কবিদের নাম | পদ সমষ্টি | পদ সংখ্যা |
১. কাহ্ন পা | ১৩টি | ৭, ৯, ১০, ১১, ১২, ১৩, ১৮, ১৯, ২৪, ৩৬, ৪০, ৪২, ৪৫ |
২. ভুসুক পা | ৮টি | ৬, ২১, ২৩, ২৭, ৩০, ৪১, ৪৩, ৪৯ |
৩, সরহ পা | ৪টি | ২২, ৩২, ৩৮, ৩৯ |
৪. কুক্কুরি পা | ৩টি | ২, ২০, ৪৮ |
৫. লুই পা | ২টি | ১, ২৯ |
৬. শবর পা | ২টি | ২৮, ৫০ |
৭. শান্তি পা | ২টি | ১৫, ২৬ |
৮. আর্যদেব | ১টি | ৩১ |
৯. কঙ্কণ পা | ১টি | ৪৪ |
১০. কম্বলাম্বর পা | ১টি | ৮ |
১১. গুড্ডরী পা | ১টি | ৪ |
১২. চাটিল পা | ১টি | ৫ |
১৩. জয়নন্দী | ১টি | ৪৬ |
১৪. ডোম্বি পা | ১টি | ১৪ |
১৫. ঢেনঢন পা | ১টি | ৩৩ |
১৬. তন্ত্রী পা | ১টি | ২৫ |
১৭. তাড়ক পা | ১টি | ৩৭ |
১৮. দারিক পা | ১টি | ৩৪ |
১৯. ধাম / গুঞ্জরী পা | ১টি | ৪৭ |
২০. বিরূপা পা | ১টি | ৩ |
২১. বীণা পা | ১টি | ১৭ |
২২. ভদ্র পা | ১টি | ৩৫ |
২৩. মহীধর পা | ১টি | ১৬ |
পদ নং | মূল পদ | পদকর্তা |
১. | *** ‘কা আ তরুবর পঞ্চবি ডাল’ | লুই পা |
২. | *** ‘দুলি দুহি পিটা ধরণ ন জাই’ | কুক্কুরি পা |
৩. | ‘এক সে সুন্ডিনি দুই ঘরে সান্ধাঅ’ | বিরুপা পা |
৪. | ‘তিঅড্ডা চাপি জোইনি দে অঙ্কবালী’ | গুন্ডরী পা |
৫. | ‘ভবণই গহণ গম্ভীর বেগে বাহি’ | চাটিল পা |
৬. | ‘কাহারে ঘিণি মেলি অচ্ছহু কীস’ | ভুসুক পা |
৭. | ‘আলিএ কালিএ বাট রুন্ধেলা’ | কাহ্ণ পা |
৮. | *** ‘সোনে ভরিলী করুণা নাবী’ | কম্বলাম্বর পা |
৯. | ‘এবংকার দৃঢ় বাথোর মোড্ডউ’ | কাহ্ণ পা |
১০. | *** ‘নগর বাহিরে রে ডোম্বি তোহোড়ি কুড়আ’ | কাহ্ণ পা |
১১. | ‘নাড়ি শক্তি দিঢ় ধরিঅ খট্টে’ | কাহ্ণ পা |
১২. | ‘করুণা পিহাড়ি খেলহু নয় বল’ | কাহ্ন পা |
১৩. | ‘তিশরণ ণাবি কিঅ অঠকমারী’ | কাহ্ন পা |
১৪. | ‘গঙ্গা জউণা মাঁঝেরে বইহ নাই’ | ডোম্বি পা‘ |
১৫. | ‘সঅসন্বেঅণ সরুঅ বিআরেতে অলকখ লকখণ ন জাই’ | শান্তি পা |
১৬. | ‘তিণিএ পাটে লাগিলি রে অণহ কসণ ঘণ গাজই’ | মহীধর পা |
১৭. | ‘সূজ লাউ সসি লাগেলি তাপ্তি’ | বীণা পা |
১৮. | ‘তিনি ডুঅন মই বাহিঅ হেলে’ | কাহ্ণ পা |
১৯. | ‘ভব নিব্বানে পড়হ পড়হমালা’ | কাহ্ণ পা |
২০. | ‘হাঁউ নিরাসি খমন ভতারি’ | কুক্কুরি পা |
২১. | *** ‘নিসি অন্ধারি মুসার চারা’ | ভুসুকু পা |
২২. | ‘অপণে রচি রচি ভব নির্বাণা’ | সরহ পা |
২৩. | ‘জই তুমহে ভুসুকু অহেরি জাইবে মরিহষি পঞ্চজনা’ | ভুসুকু পা |
২৪. | (এটি পাওয়া যায় নি) | |
২৫. | (এটি পাওয়া যায় নি) | |
২৬. | ‘তুলা ধুণি ধুণি আসুরে আঁসু’ | শান্তি পা |
২৭. | ‘অধরাতি ভোর কমল বিকসউ’ | ভুসুকু পা |
২৮. | *** ‘উচা উচা পাবত তহি বসই সবরী বালী’ | শবর পা |
২৯. | ‘ভাব না হোই অভাব ন জাই’ | লুই পা |
৩০. | ‘করুণ মেহ নিরন্তর ফরিঅ’ | ভুসুকু পা |
৩১. | ‘জহি মন ইন্দি অবন হো নঠা’ | আর্যদেব |
৩২. | ‘নাদ ন বিন্দু ন রবি ন সসিমন্ডল’ | সরহ পা |
৩৩. | *** ‘টালত মোর ঘর নাহি পড়বেষি’ | ঢেন্ঢণ পা |
৩৪. | ‘সুনকরুণরি অভিনচারে কাঅবাকচিঅ’ | দারিক পা |
৩৫. | ‘এতকাল হাঁউ অচ্ছিলেষু মোহে’ | ভদ্র পা |
৩৬. | ‘সুন বাহ তথতা পহারি’ | কাহ্ণ পা |
৩৭. | ‘আপণে নাহি মো কাহেরি সঙ্কা’ | তাড়ক পা |
৩৮. | ‘কা্আ নাবডহি খান্টিমণ কেডুআল’ | সরহ পা |
৩৯. | *** ‘সুইনা হথ বিদারম রে’ | সরহ পা |
৪০. | ‘জো মনগোএর আলাজালা’ | কাহ্ন পা |
৪১. | ‘আইএ অনুঅনা এ জগরে ভাংতঅ সো পড়িহাই’ | ভুসুকু পা |
৪২. | ‘চিঅ সহজে শূণ সংপুন্না’ | কাহ্ন পা |
৪৩. | ‘সহজ মহাতরু ফরিঅ এ তৈলো্এ’ | ভুসুকু পা |
৪৪. | ‘সুনে সুন মিলিত্তা জবেঁ’ | কঙ্কণ পা |
৪৫. | ‘মণ তরু পাঞ্চ ইন্দি তসু সাহা’ | কাহ্ন পা |
৪৬. | ‘পেখু সুঅনে অদশ জইসা’ | জয়নন্দী পা |
৪৭. | ‘কমলকুলিশ মাঝেঁ ভইঅ মিঅলি’ | ধাম পা / গুঞ্জরী পা |
৪৮. | (এটি পাওয়া যায় নি) | |
৪৯. | ‘বাজনাব পাড়ী পঁউয়া খালে বাহউ’ | ভুসুকু পা |
৫০. | ‘গঅনত গঅনত তইলা বাডহি হেঞ্চে কুরাহী’ | শবর পা |
চর্যার ছন্দঃ
চর্যার ছন্দে অপভ্রংশ ও অবহট্টের প্রভাব আছে বলে মনে করা হয়। আবার কেউ কেউ পাদাকুলক ছন্দের কথা বলেছেন। চর্যার দুটি ছন্দের প্রভাব লক্ষিত হয় - একটি যোলমাদ্রার প্রাচীন ‘পদ্ধড়ী' বা 'চৌপদী' ছন্দ এর থেকেই বাংলা পদ্দার ছন্দের উৎপত্তি। আর আছে প্রত্ন মাদ্রাবৃত্তের দীর্ঘ ত্রিপদী ছন্দ। পরবর্তী কালে এই দীর্ঘ ত্রিপদী ছন্দ বাংলা অক্ষরবৃত্ত ত্রিপদী ছন্দের প্রচলন দুটি গেছে।
চর্যাগীতিতে ৬টি প্রবাদ প্রবচন পাওয়া যায় । এগুলি হলঃ
(a) ‘আপনা মাংসে হরিণা বৈরী’ (হরিণের মাংসই তার জন্য শত্রু),
(b) ‘দুহিলা দুধু কি বেন্টে সমাঅ’(দোহন করা দুধ কি আর বাটে প্রবেশ করানো যায় ?),
বিশুদ্ধ সাহিত্য সৃষ্টির উদ্দেশ্য নিয়ে চর্যাপদ রচিত না হলেও চর্যাপদের কবিগণ বাস্তব জীবনের বিভিন্ন চিত্রকে রুপক হিসাবে ব্যবহার করেছেন বিভিন্ন চর্যার পদগুলিতে । যেমন --
এক নজরে চর্যাপদ |
Very helpful this note.আধুনিক যুগের উপর এই ভাবে নোটস দিলে খুবই ভালো হবে।
ReplyDeleteসুন্দর ভাবে সাজিয়ে লেখা।
ReplyDeleteextra ordinary
ReplyDelete